সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

প্রশ্নের মান - ৮ লেবেল থাকা পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

ইক্তা কী ? ইক্তা ব্যবস্থার বিবর্তন

ইক্তা ব্যবস্থার বিবর্তন আলোচনা করো। ইক্তা কী ? ইক্তা ব্যবস্থার বিবর্তন ইক্তা কী : সুলতানি যুগে ভারতের ভূমি রাজস্ব ব্যবস্থা ইক্তা নামে পরিচিত ছিল। ‘ইক্তা’ শব্দের অর্থ হল ‘এক অংশ’ বা ‘এক ভাগ’। ঐতিহাসিক ড. ইরফান হাবিবের মতে, “ইসলামের বিধান অনুসারে কৃষকের উৎপন্ন ফসলের উদ্বৃত্তের একাংশ কর হিসেবে গ্রহণ করা হয় এবং তা প্রাদেশিক মুসলিম শাসকদের মধ্যে বন্টন করা হয়। এই প্রথাকে ইক্তা প্রথা বলা হয়।” ইক্তা ব্যবস্থার উদ্দেশ্য : সুলতান ইলতুতমিস ভারতে ইক্তা ব্যবস্থার প্রচলন করেন। এই ব্যবস্থার উদ্দেশ্য ছিল মূলত : সুলতানি অধিকৃত অঞ্চলগুলির উপর কেন্দ্রীয় সরকারের কার্যকরী নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা। সুলতানি সাম্রাজ্যের প্রসার ঘটানো। সাম্রাজ্যে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ বৃদ্ধি করা। আমির-ওমরাহদের সন্তুষ্ট করে সাম্রাজ্যে বিদ্রোহের আশঙ্কা দূর করা। ঐতিহাসিক কে.এ. নিজামি লিখেছেন, “ভারতের সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার জন্য দিল্লির প্রথম দিকের তুর্কি সুলতানগন বিশেষ করে ইলতুৎমিস ইক্তা অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেন।” ইক্তা ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য : ইক্তা ব্যবস্থাকে বিশ্লেষণ করলে এর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য লক্...

রুশোর রাষ্ট্রদর্শন ও তার মূল্যায়ন

রুশোর রাষ্ট্রদর্শন সম্পর্কে আলোচনা করো। রুশোর রাষ্ট্রদর্শন ও তার মূল্যায়ন আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তার জগতে এক অনন্য সাধারণ ব্যক্তিত্ব হলেন ফরাসি চিন্তাবিদ ও দার্শনিক জ্যাঁ জ্যাঁক রুশো। তাঁর রাষ্ট্রদর্শন পরবর্তীকালে ইউরোপের জ্ঞানদীপ্তির যুগ এবং বিশেষত ফরাসি বিপ্লবকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিল। রুশোর রাষ্ট্রদর্শনের উৎস : প্লেটোর প্রভাব : রুশোর রাষ্ট্রচিন্তার ওপর প্লেটোর চিন্তাধারার গভীর প্রভাব পড়েছিল। প্লেটোর রাজনৈতিক আনুগত্য , যা আইন ও শক্তির উৎস হিসাবে বিবেচিত এবং লোকসমাজ , যা নৈতিক মূল্যবোধের প্রতিনিধিত্ব করে। রুশো প্লেটোর এই মৌলিক চিন্তাধারার দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বলেছিলেন, "সমাজ ছাড়া ব্যক্তির পক্ষে কোনও ক্ষমতা অর্জন সম্ভব নয়।" লকের প্রভাব : অন্যদিকে জন লকের স্বাভাবিক অধিকার , সম্মতির তত্ত্ব , লোকসমাজের সর্বভৌমিকতা প্রভৃতির দ্বারা প্রভাবিত হয়ে তিনি তাঁর রাষ্ট্রচিন্তার তত্ত্ব প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ল্যাস্কির মতে, "রুশোর শিক্ষাটি লকের খনন করা চ্যানেলের একটি বিস্তৃত সমাপ্তি মাত্র।" ("Rousseau's teaching is only a broad endingof the channel dug by Locke.") তবে, মনে ...

নতুন রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সপ্তম হেনবির অবদান

‘নতুন রাজতন্ত্র’ প্রতিষ্ঠায় সপ্তম হেনবির অবদান কী ছিল? নতুন রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সপ্তম হেনবির অবদান সপ্তম হেনরি ছিলেন ইংল্যান্ডের টিউডর রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা। ১৪৮৫ সালে তিনি যে রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন, তা ইংল্যান্ডের ইতিহাসে ‘নতুন রাজতন্ত্র’ বা ‘ নব্য রাজতন্ত্র ’ নামে পরিচিত। এটা তিনি সম্ভব করেছিলেন, ইংল্যান্ডের শাসনতন্ত্রে বেশ কিছু অভিনব পরিবর্তন সাধনের মাধ্যমে। যেমন, ১) ব্যারনদের ক্ষমতা হ্রাস :  এর আগে ইংল্যান্ডের রাজপরিবারগুলোর সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করে সামন্তপ্রভুরা (ব্যারন) নিজেদের ক্ষমতা ও প্রতিপত্তি বৃদ্ধি করতেন। সপ্তম হেনরি এদের পরিবর্তে স্পেন, ফ্রান্স ও স্কটল্যান্ডের রাজপরিবারগুলির সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপনের নীতি গ্রহণ করেন। ফলে ব্যারনদের ক্ষমতা সীমাবদ্ধ হয়ে যায়। ২) সামন্ত প্রভুদের দমন :  ১৪৮৭ সালে তিনি ‘ স্টার চেম্বার আইন ’ পাস করে সামন্তপ্রভুদের ব্যক্তিগত সেনাবাহিনী রাখার প্রথা পুরোপুরি নিষিদ্ধ করে দেন। ৩) মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মর্যাদা বৃদ্ধি : সরকারি উচ্চপদ ও মন্ত্রীপদে অভিজাত সামন্তদের নিয়োগ না করে তিনি মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষকে উচ্চপদে নিয়োগের ...

টমাস ক্রমওয়েলের কার্যাবলী মূল্যায়ন

টমাস ক্রমওয়েলের কার্যাবলী / সংস্কারগুলোর মূল্যায়ন করো। টমাস ক্রমওয়েলের কার্যাবলী মূল্যায়ন ইংল্যান্ডের টিউটর বংশের রাজা অষ্টম হেনরির প্রধানমন্ত্রী ছিলেন টমাস ক্রময়েল। ‘ নব্য রাজতন্ত্রে ’ রাজার ক্ষমতা বৃদ্ধিই ছিল তাঁর প্রধান লক্ষ্য। এই লক্ষ্য পূরণে তিনি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ (সংস্কার) করেছিলেন। এই পদক্ষেপগুলির মাধ্যমে টমাস ক্রমওয়েল যে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধন করেছিলেন, তা ইংল্যান্ডের ইতিহাসে ‘ টিউডর বিপ্লব’ নামে পরিচিত। টমাস ক্রমওয়েল বিভিন্ন পদক্ষেপ / সংস্কার : বিবাহ সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান :   অষ্টম হেনরির কোন পুত্রসন্তান ছিল না। এই পরিস্থিতিতে তিনি অ্যানবোলিন নামে এক মহিলাকে বিবাহ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তৎকালীন নিয়ম অনুযায়ী বর্তমান স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ ও পোপের অনুমোদন ছাড়া এই বিবাহ বৈধ নয়। কিন্তু পোপ বিবাহবিচ্ছেদে অনুমোদন দিতে অস্বীকার করলে সমস্যা তৈরি হয়। এই পরিস্থিতিতে ক্রমওয়েল রাজার পুনর্বিবাহের অনুকূলে আইন (‘ অ্যাক্ট অব অ্যাপিলস’ ) প্রণয়ন করে এই সমস্যার সমাধান করেন। রাজার ক্ষমতা বৃদ্ধি :   রাজার ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য একাধারে তিনি পাঁচটি আইন পাশ ...

দিল্লির সুলতানি শাসন কী ধর্মাশ্রয়ী ছিল?

দিল্লির সুলতানি শাসন কী ধর্মাশ্রয়ী ছিল? দিল্লির সুলতানি শাসন কী ধর্মাশ্রয়ী ছিল? ভারতে সুলতানি শাসন কি ধর্মাশ্রয়ী ছিল? সুলতানি শাসনের প্রকৃতি সম্পর্কিত এই প্রশ্ন বিষয়ে ভারতীয় ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। ঐতিহাসিক ঈশ্বরী প্রসাদ, এ এল শ্রীবাস্তব, আর পি ত্রিপাঠি, রাম স্মরণ শর্মা প্রমুখ মনে করেন সুলতানি রাষ্ট্রের প্রকৃতি ছিল ধর্মাশ্রয়ী। অন্যদিকে সতীশচন্দ্র, মোহাম্মদ হাবিব, ডাক্তার কুরেশি, কে এম আশরাফ, ডঃ নিজামী প্রমূখ ঐতিহাসিক-এর মতে, সুলতানি রাষ্ট্র ছিল ধর্মনিরপেক্ষ, সামরিক ও অভিজাতান্ত্রিক। সুলতানি শাসন ধর্মাশ্রয়ী : পক্ষে যুক্তি  সুলতানি সাম্রাজ্যের প্রকৃতি ধর্মাশ্রয়ী ছিল -  এই মত প্রকাশকারী ঐতিহাসিকদের যুক্তি হল : শরীয়াতের প্রতি গুরুত্ব : সুলতানি শাসকরা ইসলামিক আইন অনুযায়ী শাসন ব্যবস্থা পরিচালনা করত। ডক্টর ঈশ্বরী প্রসাদের মতে, সুলতানি আমলের সামাজিক আইন গুলি ইসলামী ধর্মশাস্ত্র বা শরীয়তের বিধান অনুযায়ী লিপিবদ্ধ হয়েছিল। উলেমা শ্রেণীর গুরুত্ব : এই শাসনব্যবস্থায় উলেমা শ্রেণীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল এবং ইসলামী শাস্ত্র ও আইন কানুন অনুযায়ী শাসন পরিচালিত হত। বলা হয...

মিশরের রানি ক্লিওপেওট্রার কার্যাবলী

রাজনৈতিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠায় মিশরের রানি ক্লিওপেওট্রার কার্যাবলী সম্পর্কে আলোচনা করো। ক্লিওপেট্রা : ক্লিওপেট্রা ছিলেন প্রাচীন মিশরের টলেমি রাজবংশের একজন কিংবদন্তী নারী, রাজকন্যা ও শাসক। প্রাচীন বিশ্বের ইতিহাসে যে কয়েকজন নারী নিজ প্রতিভাগুণে অমর হয়ে আছেন, তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন দ্বাদশ টলেমির কন্যা সপ্তম ক্লিওপেট্রা , যিনি ক্লিওপেট্রা নামেই পৃথিবীর ইতিহাসে পরিচিতি পেয়েছেন।  সহ-শাসক ক্লিওপেট্রা : গ্রিক বীর আলেকজান্ডারের মৃত্যুর পর তাঁর অন্যতম সেনাপতি টলেমি মিশর আক্রমণ করেন এবং সেখানে টলেমি বংশের শাসন প্রতিষ্ঠা করেন। এই বংশের দ্বাদশ টলেমির কন্যা ছিলেন ক্লিওপেট্রা। মাত্র ১৮ বছর বয়সে পিতার সঙ্গে সহ শাসক হিসাবে মিশরের শাসন পরিচালনায় হাত দেন ।  ক্লিওপেট্রার সিংহাসন লাভ : তৎকালীন প্রচলিত রীতি অনুযায়ী একাকী কোন শাসক শাসন কাজ পরিচালনা করতে পারতেন না। তাই পিতার মৃত্যুর পর তার ছোট ভাই ত্রয়োদশ টলেমির সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন এবং মিশরের সিংহাসনে নিজ দখলে রাখেন।  ক্লিওপেট্রা ও রোমান আক্রমণ : সিংহাসন লাভের কয়েক বছরের মধ্যে খ্রীষ্টপূর্বা ৪৭ অব্দে  রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজার মিশ...

প্রাচীন ভারতে নারীর সামাজিক অবস্থান

 প্রাচীন ভারতে নারীর সামাজিক অবস্থানের ওপর একটি প্রবন্ধ রচনা করো। সমাজে নারীর অবস্থান : প্রাচীনকালে গ্রীস ও রোমের মত ভারতীয় নারীরাও সমাজে বিশিষ্ট স্থান অধিকার লাভ করেছিল। তবে তা মূলত উচ্চশ্রেণির মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল।  ঋগবৈদিক যুগে নারীর অবস্থান :  নারীর গুরুত্ব : পুত্র সন্তান কাম্য হলেও নারীরা মেটেও অবহেলিত ছিল না।  নারী শিক্ষা : নারীরা যথেষ্ট শিক্ষার সুযোগ লাভ করেছিল। এ যুগের উল্লেখযোগ্য বিদুষী নারী ছিলেন - লোপমুদ্রা, ঘোষা, অপলা মমতা প্রমুখ। বেদ পাঠের অধিকার : এই সময় নারীদের বেদ পাঠের অধিকার ছিল বলেও জানা যায়। এমনকী বেদের স্তোত্র রচনায় অংশ নিয়েছিল বলে জানা যায়।  পরবর্তী বৈদিক যুগে নারীর অবস্থান : নারীর গুরুত্ব হ্রাস : এই সময় নারী বেদ পাঠের অধিকার হারায়।  নারী শিক্ষা উপেক্ষিত : তৈত্তিরীয় সংহিতায় নারী শিক্ষার প্রয়োজন নেই বলে জানান হয়। ফলে নারী শিক্ষা ব্যাহত হয়। তা সত্ত্বেও এ সময় কোন কোন নারী উচ্চশিক্ষায় কৃতিত্ব অর্জন করেন। যেমন, গার্গী, মৈত্রেয়ী প্রমুখ।  প্রতিবাদী আন্দোলনের যুগে নারীর অবস্থান : নারী শিক্ষা : বৌদ্ধ গ্রন্থ বিনয়পিটক থেকে জানা...

স্পার্টার স্বাধীন নাগরিকদের সঙ্গে ক্রীতদাসদের (হেলট) সম্পর্ক

স্পার্টার স্বাধীন নাগরিকদের ( স্প্যার্টিয়েট ) সঙ্গে হেলট ও পেরিওকয়দের সম্পর্ক  প্রাচীন গ্রিসের নগররাষ্ট্র স্পার্টার স্বাধীন নাগরিকদের ( স্প্যার্টিয়েট ) সঙ্গে হেলট ও পেরিওকয়দের সম্পর্ক কেমন ছিল? স্পার্টার স্বাধীন নাগরিক ও ক্রীতদাস : প্রাচীন গ্রিসের একটি গুরুত্বপুর্ণ পলিস হল স্পার্টা। স্পার্টার সমাজ কাঠামোয় তিন শ্রেণির মানুষ বসবাস করত। এরা হল - স্প্যার্টিয়েট, হেলট বা কৃতদাস এবং পেরিওকয় বা অর্ধ-স্বাধীন নাগরিক।       ** ১) স্পার্টার স্বাধীন নাগরিক : স্পার্টার স্বাধীন নাগরিক বলা হত স্প্যার্টিয়েট।  এরা প্রচুর জমিজমার মালিক হত এবং এদের একমাত্র পেশা ছিল সৈনিক হিসাবে কাজ করা। ২) অর্ধ-স্বাধীন নাগরিক : স্পার্টার অর্ধ-স্বাধীন প্রজাদের বলা হত পেরিওকয়। এরা শাসকগোষ্ঠীর রাজকীয় জমিজমা চাষ, শিল্পোৎপাদন ও বাণিজ্যের কাজে নিয়োজিত হত। ৩) স্পার্টার ক্রীতদাস :  এবং হেলট হল স্পার্টার ক্রীতদাস শ্রেণি। এরা সমাজের সবচেয়ে নির্যাতিত ও শোষিত শ্রেণি। ঐতিহাসিক অ্যানড্রুজ বলেছেন, স্পার্টার হেলটরা ছিল পুরোপুরি ক্রীতদাস। স্পার্টার স্বাধীন নাগরিক ও ক্রীতদাসদের সম্পর্ক : স্পার্টার স্বাধী...

প্রাচীন গ্রিসের সমাজে দাস ও দাস-প্রভুর সম্পর্ক

 প্রাচীন গ্রিসের সমাজে দাস ও দাস-প্রভুর সম্পর্ক কেমন ছিল? প্রাচীন গ্রিসের সমাজব্যবস্থা অনুযায়ী, ক্রীতদাস হল এক ধরণের মানব সম্পদ, যা প্রকৃতির বিধান অনুযায়ী তার প্রভুর মানিকানাধীন থাকতে বাধ্য এবং প্রভু তার নিজের ইচ্ছামত তাকে ক্রয়, বিক্রয় কিম্বা বিভিন্ন উৎপাদন কর্মে কাজে নিয়োগ করতে পারে। অর্থাৎ দাস হল একধরণের মনুষ্য-সম্পদ এবং দাস-প্রভু হল তার মালিক।  দাস ও দাস-প্রভুর সম্পর্ক :  গভীর সমাজতাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে এই সম্পর্কের দুটি মুখ লক্ষ্য করা যায়। একটি সুসম্পর্কের অন্যটি নির্যাতনমূলক।  সুসম্পর্কের দিক : প্রভু-ভৃত্যের এই সম্পর্ক কখনও কখনও খুবই মধুর হয়ে উঠত। প্রভুর অধীনস্ত দাসরা অনেক সময় স্বাধীন বা বিদেশী শ্রমিকদের সঙ্গে এমনভাবে কাজ করতে পারত যে তাদের আলাদাভাবে দাস হিসাবে চেনা যেত না।  অনেক সময় দাস ও দাস-প্রভু এক সঙ্গে বসবাস করত। এমনকী এক টেবিলে বসে আহার করার নজিরও রয়েছে। এই ধরণের সম্পর্কের কারণে অনেক সময় দেখা যেত দাস তার প্রভুর জীবন রক্ষার জন্য নিজের জীবন বিপন্ন করতেও দ্বিধা করছে না।  এই ধরণের সম্পর্কের কারণে দাস-প্রভুও তার অধীনস্ত দাসকে পুরস্কৃত করত। ঐত...

প্রাচীন গ্রিসে ক্রীতদাস প্রথা ও তাঁর উৎপত্তি

ক্রীতদাস বলতে কী বোঝ? প্রাচীন গ্রিসে কীভাবে ক্রীতদাস সৃষ্টি হত? ক্রীতদাস : ক্রীতদাস কাদের বলা হবে, এ বিষয়ে সমাজবিজ্ঞানীদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। ডিও ক্রাইসস্টম ক্রীতদাসদের গবাদি পশুর সঙ্গে তুলনা করে বলেছেন, গবাদি পশু যেমন তাঁর প্রভুর সম্পত্তি, ঠিক তেমনি ক্রীতদাস হল একজন প্রভুর ব্যক্তিগত সম্পত্তি, যা তিনি ইচ্ছামত বিক্রয় কিম্বা কোন উৎপাদনের কাজে লাগাতে পারে।  প্রখ্যত গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টটল বলছেন, ক্রীতদাস হল এমন এক সত্তা যার কোন পৃথক বা স্বাধীন অস্তিত্ব নেই। প্রভুর মালিকানাধীনে থাকার ওপরই তার অস্তিত্ব নির্ভর করে এবং এটাই প্রকৃতিরই বিধান। সুতরাং প্রাচীন গ্রিসের সমাজব্যবস্থা অনুযায়ী, ক্রীতদাস হল এক ধরণের মানব সম্পদ, যা প্রকৃতির বিধান অনুযায়ী তার প্রভুর মানিকানাধীন থাকতে বাধ্য এবং প্রভু তার নিজের ইচ্ছামত তাকে ক্রয়, বিক্রয় কিম্বা বিভিন্ন উৎপাদন কর্মে নিয়োগ করতে পারে। ক্রীতদাস প্রথা : প্রাচীন গ্রিসের সমাজ ব্যবস্থায় প্রচলিত এবং আইনি স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ক্রীতদাসদের ক্রয়, বিক্রয় ও প্রভুর নিজস্ব ইচ্ছা অনুযায়ী তাকে উৎপাদন কিম্বা সৃষ্টিশীল কাজে নিয়োগ করার অধিকার সম্বলিত সামাজিক প্রথার নাম ক...

আধুনিক রাষ্ট্র সম্পর্কে টমাস হবস-এর রাষ্ট্রচিন্তা। তাঁকে কেন 'উপযোগিতাবাদের অগ্রদূত' বলা হয়?

আধুনিক রাষ্ট্র সম্পর্কে টমাস হবস-এর রাষ্ট্রচিন্তা আধুনিক রাষ্ট্রদর্শন সম্পর্কে টমাস হবস-এর রাষ্ট্রচিন্তার মূল্যায়ন করো। তাঁকে কেন 'উপযোগিতাবাদের অগ্রদূত' বলা হয়? টমাস হবসের রাষ্ট্র দর্শন : সপ্তদশ শতকে ইংল্যান্ডে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। যুদ্ধের সমাপ্তি হয় রাজা পঞ্চম চার্লসের শিরচ্ছেদের মাধ্যমে যা 'পিউরিটান বিপ্লব' নামে পরিচিত। এই বিপ্লব এবং পরবর্তীকালের টমাস ক্রমওয়েলের প্রজাতান্ত্রিক সরকারের সমালোচনা করার প্রেক্ষাপটে টমাস হবস লেখেন 'লোভিয়াথান' গ্রন্থ। এই গ্রন্থে তিনি রাজতন্ত্রী ও প্রজাতন্ত্রী সরকারের দোষ ত্রুটি তুলে ধরে যে নতুন রাষ্ট্রদর্শনের জন্ম দিয়েছিলেন তাই টমাস হাবসের রাষ্ট্রদর্শন নামে পরিচিত। টমাস হবস এর রাষ্ট্রচিন্তার মূল প্রতিপাদ্য বিশ্লেষণ করলে তার কিছু উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায় : - টমাস হবসের রাষ্ট্রদর্শনের মূলকথা (বৈশিষ্ট্য) : ১) প্রাকৃতিক রাষ্ট্রের ধারণা: টমাস হবস তাঁর ‘লেভিয়াথান’ গ্রন্থে লিখেছেন, i) প্রাকৃতিক রাষ্ট্রের নৈরাজ্য: প্রাচীন রাষ্ট্রহীন প্রাকৃতিক অবস্থায় মানুষ ছিল স্বভাবগতভাবেই স্বার্থপর ও আগ্রাসী। সেখানে মানুষ ঈশ্বরের চে...

জনপদ ও মহাজনপদের মধ্যে পার্থক্য দেখাও।

জনপদ ও মহাজনপদের মধ্যে পার্থক্য জনপদ ও মহাজনপদের মধ্যে পার্থক্য Differences between Janapada and Mahajanapada জনপদ ও মহাজনপদগুলোর উৎপত্তি ও বিকাশ বিশ্লেষণ করলে এদের মধ্যে কিছু মৌলিক পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। এগুলো হল - ১) সময়কাল : প্রাচীন আর্য উপজাতিদের বাসভুমিকে জন বলা হয়। এগুলোই খ্রিষ্টপুর্ব ১০০০-৬০০ অব্দের মধ্যে জনপদে পরিণত হয়। কিন্তু মহাজনপদগুলো গড়ে ওঠে খ্রিস্টপুর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীর (৬০০) পরবর্তীকালে। ২) উদ্ভবের কারণ : লোহার ব্যবহার ও কৃষির বিকাশের সাথে সাথে জনপদগুলোর বিকাশ ঘটে।  কিন্তু জনপদগুলোর মধ্যে ধারাবাহিক সংঘর্ষ ও একাধিক জনপদের পারস্পরিক সংযুক্তির মাধ্যে দিয়ে মহাজনপদের উদ্ভব হয়। ৩) আয়তন ও জনসংখ্যা : জনপদগুলোর আয়তন ছিল ক্ষুদ্রাকার ও জনসংখ্যা ছিল খুবই অল্প। গ্রিসের নগররাষ্ট্রের সঙ্গে তুলনা করা যায়।  অন্যদিকে, মহাজনপদগুলোর আকৃতি অপেক্ষাকৃত বৃহৎ এবং জনসংখ্যাও তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। ৪) সম্পদ : জনপদের প্রধান সম্পদ ছিল গবাদি পশু।  অপরদিকে, মহাজনপদ সৃষ্টির পর কৃষির ব্যপক বিকাশ ঘটলে গরুর পাশাপাশি কৃষিজমি ও কৃষিপণ্য সম্পদ হ...

মহাজনপদ কী? মহাজনপদের বৈশিষ্ট্য সংক্ষেপে লেখো।

মহাজনপদ কী? মহাজনপদের বৈশিষ্ট্য সংক্ষেপে লেখো। মহাজনপদ ও মহাজনপদের বৈশিষ্ট্য  What is Mahajanapada? Briefly write the characteristics of Mahajanapada. মহাজনপদ কী : 'মহা' অর্থ বৃহৎ। 'জনপদ' কথার অর্থ 'নির্দিষ্ট ভূখণ্ডসহ জনসমষ্টি। অর্থাৎ  ক্ষুদ্র রাজ্য। খ্রীষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকের আগে ভারতে উপজাতি গোষ্ঠীভিত্তিক ছোট ছোট জনপদ গড়ে উঠেছিল। এই জনপদ গুলি পরস্পরের ভূখণ্ড দখল করার তাগিদে নিজেদের মধ্যে সব সময় সংঘর্ষে লিপ্ত থাকতো। এই সংঘর্ষে জয় পরাজয়ের সূত্র ধরেই উত্তর ভারতে একাধিক জনপদ সংযুক্ত হয়ে যেত। ফলে বৃহৎ জনপদ বা রাজ্যের জন্ম হয়। এই ধরনের বৃহৎ জনপদ বা রাজ্যগুলি ' মহাজনপদ' নামে পরিচিত হয়। খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীর তিনটি উল্লেখযোগ্য মহাজনপদের নাম হলো মগধ (রাজতান্ত্রিক), বৃজি ও মল্ল (প্রজাতান্ত্রিক)। মহাজনপদের বৈশিষ্ট্য : এই মহাজনপদগুলির ভৌগোলিক অবস্থান ও রাজনৈতিক চরিত্র বিশ্লেষণ করলে কয়েকটি বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়।           ১) উত্তর ভারত কেন্দ্রিক অবস্থান :   ডক্টর হেমচন্দ্র রায়চৌধুরী মতে, মহাজনপদ গুলির অধিকাংশের অবস্থ...

জনপদ কী? প্রাচীন ভারতে জনপদ গড়ে ওঠার কারণ ব্যাখ্যা করো।

জনপদ কী? কীভাবে প্রাচীন ভারতে জনপদের উৎপত্তি হয়? জনপদ কী : 'জন' শব্দের অর্থ উপজাতি বা জনগোষ্ঠী। 'পদ' শব্দের অর্থ পা। চার্লস ল্যানম্যান -এর মতে, নির্দিষ্ট কোন জাতিগোষ্ঠী যখন কোন নির্দিষ্ট কোন ভৌগোলিক এলাকায় বসতি গড়ে তোলে তখন সেই ভৌগোলিক এলাকাকে  'জনপদ' বলে। কৌটিল্য জনপদ বলতে  নির্দিষ্ট ভূখণ্ড ও জনসমষ্টিকে বুঝিয়েছেন। এই জনপদে একদিকে থাকবে বিচক্ষণ উচ্চবর্ণের মানুষ বা প্রভু। অন্যদিকে থাকবে - ১) পর্যাপ্ত পরিমাণ উর্বর জমি এবং ২) সেই ভূখন্ডে থাকবে প্রচুর পরিশ্রমী কৃষক যাদের কর প্রদানের চাপ ও শাস্তি সহ্য করার ক্ষমতা থাকবে।  জনপদ গড়ে ওঠার কারণ (পটভূমি) : আর্যদের আগমন : আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০ অব্দে আর্যরা ভারতে প্রবেশ করে। এর ছিল যাযাবর প্রকৃতির । কারণ, পশু খাদ্যের সন্ধানে তারা বসবাসের জায়গা পরিবর্তন করত। তবে তারা গোষ্ঠীবদ্ধ জীবন যাপন করত। তাই এদের 'জন' (জনগোষ্ঠী বা উপজাতি) বলা হত।  জনসংখ্যা বৃদ্ধি : সপ্ত সিন্ধু এলাকায় উর্বর ভূমির কল্যাণে আর্যদের মধ্যে স্থায়ীভাবে বসবাসের প্রবণতা বাড়ে। ফলে নির্দিষ্ট এলাকায় জনসংখ্যা বাড়তে থাকে। ক্রমশ তারা অর্ধ-যাযাবর জীবনে ...

প্রাচীন গ্রিসে নগররাষ্ট্র গড়ে ওঠার কারণ বা পটভূমি বর্ননা করো।

প্রাচীন গ্রিসে নগররাষ্ট্র গড়ে ওঠার কারণ বা পটভূমি Describe-the-reasons-or-background-for-the-development-of-city-states-in-ancient-Greece পলিস শব্দের অর্থ ' নগররাষ্ট্র '। খ্রিষ্টপূর্ব পঞ্চম থেকে ষষ্ঠ শতকে মধ্যবর্তী সময়ে গ্রিসে প্রায় ১৫০০ টি ছোট ছোট রাষ্ট্র বা সিটি স্টেট গড়ে ওঠে। এগুলির যাবতীয় কাজকর্মে নাগরিকরাই প্রত্যক্ষভাবে অংশ গ্ৰহণ করত। এই ছোট রাষ্ট্রগুলো পলিস বা নগর-রাষ্ট্র নামে পরিচিত। যেমন - এথেন্স, স্পার্টা ইত্যাদি। নগররাষ্ট্র গড়ে ওঠার কারণ বা পটভূমি প্রাচীন গ্রিসে নগররাষ্ট্র গড়ে ওঠার পটভূমি বিশ্লেষণ করলেই নগররাষ্ট্র গড়ে ওঠার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ সামনে আসে।  ১) বৈদেশিক আক্রমণ ও  অক্টোপলিস  : আনুমানিক ১০০০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে গ্রীকরা বৈদেশিক আক্রমণের ভয়ে গ্রিসের বিভিন্ন পাহাড়ের শিখরে শক্তিশালী কেন্দ্র গড়ে তোলে। এগুলো 'অক্টোপলিস' নামে পরিচিত। এই অক্টোপলিসকে কেন্দ্র করে ক্রমশ নগর গড়ে ওঠে এবং এই নগরকে কেন্দ্র করে পরবর্তীকালে নগররাষ্ট্র বা পলিস গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়।  ২) স্থানীয় বাজার : আস্তে আস্তে এই  'অক্টোপলিস'গুলোর কাছেই স্থানীয় বাজার গড়ে উঠতে থাকে।...

প্রাচীন প্রস্তর যুগ, মধ্য প্রস্তর যুগ ও নব্য প্রস্তর যুগের মধ্যে পার্থক্য দেখাও।

প্রাচীন, মধ্য ও নব্য প্রস্তর যুগের মধ্যে পার্থক্য বাংলা 👉 English অথবা,  প্রাচীন প্রস্তর যুগ, মধ্য প্রস্তর যুগ ও নব্য প্রস্তর যুগের মধ্যে তুলনা করো।

মধ্যপ্রস্তর যুগ বলতে কোন সময়কালকে বোঝানো হয়? এই যুগের বৈশিষ্ট্য লেখো

'মধ্যপ্রস্তর যুগ' ও তার বৈশিষ্ট্য প্লেইস্টোসিন যুগের শেষ পর্ব ( ১৫ হাজার বছর আগে ) থেকে হোলোসিন যুগের সূচনা পর্ব ( ১০ হাজার বছর ) পর্যন্ত সময়কালকে মধ্যপ্রস্তর যুগ বলে। অন্যভাবে বলা বলা যায়, খাদ্য সংগ্রহকারী প্রাচীন প্রস্তর যুগ এবং খাদ্য উৎপাদনকারী নব্য প্রস্তর যুগের মধ্যবর্তী সময়কালকে 'মধ্য প্রস্তর যুগ' বলা হয়। মধ্য প্রস্তর যুগের বৈশিষ্ট্য ঃ ১) সময়কাল : মধ্য প্রস্তর যুগ খ্রিষ্টপুর্ব ১৫ হাজার বছর থেকে ১০ হাজার বছর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। ২) হাতিয়ার :  এই যুগের ( মধ্য প্রস্তর যুগ ) হাতিয়ারগুলি প্রাচীন প্রস্তর যুগের চেয়ে উন্নত ও আকারে ছোটো ছিল। পাথর ছাড়া জীবজন্তুর হাড়, দাঁত ইত্যাদিও হাতিয়ার তৈরিতে ব্যবহার করা হত। ৩) জীবিকা ও জীবনযাপন : মধ্য প্রস্তর যুগের মানুষের প্রধান জীবিকা ছিল পশু শিকার ও ফলমূল সংগ্রহ। এবং জীবনযাত্রা ছিল অর্ধ যাযাবর প্রকৃতির। ৪) কৃষিকাজ : যুগের শেষ পর্বে মানুষ কৃষিকাজের সূচনা করে। ৫) পোষাক :  মধ্য প্রস্তর যুগের মানুষ প্রাচীন প্রস্তর যুগের মত গাছের ছাল ও পশুর চামড়া দিয়ে পোশাক বানাত। তবে এই পোশাক আগের চেয়ে উন্নতমানের ছিল। ৬) যানবাহন : এই ...

প্রাচীন প্রস্তর বলতে কী বোঝ? প্রাচীন প্রস্তর যুগের সময়কাল উল্লেখ করো। এই যুগের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।

প্রাচীন প্রস্তর যুগ বলতে কী বোঝ? প্লেইস্টোসিন যুগের শেষ ভাগে (৫০ হাজার - ১৫ হাজার আগে) পৃথিবীতে প্রায়-মানুষেরা ( হোমো ইরেক্টাস)  পাথরকে আকারগত পরিবর্তন না করেই হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করত। তাই তাদের হাতিয়ারগুলি হত অমসৃণ ও বৃত্তাকার। এই ধরণের অস্ত্র ব্যবহারকারী মানুষের সময়কালকে (যুগকে) 'প্রাচীন প্রস্তর যুগ' বলা হয়। প্রাচীন প্রস্তর যুগের সময়কাল : প্রাচীন প্রস্তর যুগের শুরু হয় ৫০ হাজার বছর আগে এবং শেষ হয় প্রায় ১৫ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দে প্রাচীন প্রস্তর  যুগের বৈশিষ্ট্য ঃ প্রাচীন প্রস্তর যুগের শুরু হয় ৫০ হাজার বছর আগে এবং শেষ হয় প্রায় ১৫ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দে এই যুগের মানুষ বিভিন্ন ধরণের পাথর ও হাড়ের তৈরি হাতিয়ার ব্যবহার করত। এই পর্বের মানুষ পাথরকে আকারগত পরিবর্তন না করেই হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করত। তাই তাদের হাতিয়ারগুলি হত অমসৃণ ও বৃত্তাকার। এই যুগের শেষ দিকে মানুষ তীরধনুক আবিষ্কার করে। এই পর্বের মানুষ জীবিকা নির্বাহ করত পশু শিকার, ফলমূল সংগ্রহ এবং মাছ ধরে। এই সময় মানুষ আগুনের ব্যবহার জানত না। তাই তারা কাঁচা মাংস খেত। মানুষ ছোট ছোট গোষ্ঠীবদ্ধ হয়ে বসবাস করত। অর্থাৎ তাদের ...

হোমো স্যাপিয়েন্স কাদের বলা হয়? হোমো স্যাপিয়েন্স-এর বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করো।

হোমো স্যাপিয়েন্স 'হোমো স্যাপিয়েন্স' কথার অর্থ হল 'বুদ্ধিমান মানুষ'।  হোমো ইরেক্টাস  ( দণ্ডায়মান মানুষ) নামে মানব প্রজাতির দীর্ঘ বিবর্তনের মাধ্যমে প্লেইস্টোসিন যুগের শেষ পর্বে যে 'বুদ্ধিমান মানুষ' মানব প্রজাতির আবির্ভাব হয়, তাকে  হোমো স্যাপিয়েন্স  বা  আধুনিক মানুষ  বলা হয়। উদাহরণ - নিয়ান্ডারথাল মানব। হোমো স্যাপিয়েন্স-এর বৈশিষ্ট্য ঃ এই প্রজাতির মানুষের আবির্ভাব হয় দেড় লক্ষ থেকে দুই লক্ষ বছর আগে। হোমো ইরেক্টাস  ( দণ্ডায়মান মানুষ ) নামে মানব প্রজাতির দীর্ঘ বিবর্তনের মাধ্যমে প্লেইস্টোসিন যুগের শেষ পর্বে এদের আবির্ভাব হয়। এদের মাথার খুলির আয়তন ছিল প্রায় ১৪০০ সিসি। এই আয়তনের কারণে এই প্রজাতির মানুষের বৌদ্ধিক উন্নতি লক্ষ করা যায়। তাই এদের নাম হয়  হোমো স্যাপিয়েন্স বা  বুদ্ধিমান মানুষ । এরা উদ্ভাবনী ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন। এই ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে তারা পাথরের হাতিয়ার তৈরিতে পারদর্শীতা অর্জন করে। ফলে জীবনের নিরাপত্তা বিধান ও চাহিদা পূরণের হাতিয়ার হিসাবে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি তৈরি করে। এই ক্ষমতার কারনেই তারা সমাজ গড়ার গুরুত্ব উপলব্ধি করে এবং সর্বপ্...