সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

প্রশ্নের মান - ৩ লেবেল থাকা পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

কাকে, কেন ‘আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের জনক’ বলা হয়?

কাকে, কেন ‘আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের জনক’ বলা হয়? কাকে, কেন ‘আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের জনক’ বলা হয়? Who,why is called the 'Father of Modern Astronomy? নিকোলাস কোপার্নিকাস ছিলেন একজন ভুবন-বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী। ১৪৭৩ খ্রিস্টাব্দে পোল্যান্ডের তোরুন শহরে জন্ম নেওয়া এই বিজ্ঞানী ছিলেন ইউরোপীয় নবজাগরণের একজন ধারক, বাহক ও পৃষ্ঠপোষক। সূর্যকেন্দ্রিক বিশ্বব্রহ্মাণ্ড তত্ত্বের তিনিই ছিলেন প্রথম আধুনিক প্রবক্তা । গভীর পর্যবেক্ষণ এবং গাণিতিক হিসাব নিকাশের মাধ্যমে তিনি টলেমির পৃথিবীকেন্দ্রিক তত্ত্বকে খারিজ করে এই নতুন তত্ত্ব উপস্থাপন করেন। এই তত্ত্বের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মত হল : মহাবিশ্বের কেন্দ্র বলে কিছু নেই , পৃথিবীর কেন্দ্র মহাবিশ্বের কেন্দ্র নয়।  প্রতিটি গ্রহ ও উপগ্রহের মধ্যবিন্দু হল সূর্য । সূর্যকে কেন্দ্র করেই পৃথিবী ও তার অন্যান্য উপগ্রহগুলি তাদের নির্দিষ্ট কক্ষপথে উপবৃত্তাকারে প্রদক্ষিণ করে।  পৃথিবী নিজে গতিশীল বলেই দূরের গ্রহগুলিকে চলমান মনে হয়। পৃথিবী প্রদক্ষিণরত বলেই মানুষের দৃষ্টিতে সূর্যের অবস্থান পাল্টে যায়। ১৫৪৩ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত তাঁর  ‘ On the Revolut...

কাকে, কেন ‘আধুনিক পরীক্ষামূলক বিজ্ঞানচর্চার পথিকৃৎ’ বলা হয়?

কাকে, কেন ‘আধুনিক পরীক্ষামূলক বিজ্ঞানচর্চার পথিকৃৎ’ বলা হয়? কাকে, কেন ‘আধুনিক পরীক্ষামূলক বিজ্ঞানচর্চার পথিকৃৎ’ বলা হয়? Who, why is called the ‘Pioneer of Modern Experimental Science’ ১৪৫৩ সালে কনস্টান্টিনোপলের পতনের পর ইতালিকে কেন্দ্র করে শুরু হয় ইউরোপীয় নবজাগরণ । এই নবজাগনের যুগে সূচনার অব্যবহিত পূর্বেই কিছু মানুষের মধ্যে জন্ম নেয় জগৎ ও জীবন সম্পর্কে নতুন নতুন চেতনা। এই নতুন চেতনার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল যুক্তিবাদ , মানবতাবাদ ও বিজ্ঞানমনস্কতা । বিজ্ঞানমনস্কতা বলতে বোঝায় এমন এক চেতনাকে, যা মানুষকে প্রশ্ন করতে উৎসাহিত করে এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে সত্য উপলব্ধিতে অনুপ্রাণিত করে। একজন খ্রিস্টীয় সন্ন্যাসী হওয়া সত্বেও রজার বেকনের মধ্যে ছিল এই বিজ্ঞানমনস্কতার উজ্জল উপস্থিতি। বিজ্ঞানমনস্কতার কারণেই তিনি মনে করতেন, বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে কোন তত্ত্বকে বিনা পরীক্ষায় গ্রহণ করা উচিত নয়। কারণ, কেবলমাত্র হাতে-কলমে পরীক্ষার দ্বারাই বিজ্ঞানের সত্য আবিষ্কার করা সম্ভব। এই কারণে তিনি নিজেও বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব প্রকাশের আগে পরীক্ষা-নিরীক্ষার উপরে জোর দিতেন। তাঁর এই ভাবনার প্রভাবে আধুনিক বিজ্ঞানচ...

'বৈজ্ঞানিক বিপ্লব' বলতে কী বোঝো?

'বৈজ্ঞানিক বিপ্লব' বলতে কী বোঝো? 'বৈজ্ঞানিক বিপ্লব' বলতে কী বোঝো? What do you mean by ‘Scientific Revolution’? ‘ বিপ্লব ’ শব্দের অর্থ হল ‘ আমল পরিবর্তন ’। সুতরাং, সহজ কথায়, ‘বৈজ্ঞানিক বিপ্লব’ হল বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানভিত্তিক প্রযুক্তিবিদ্যার উন্নয়ন বা অগ্রগতির ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন। তবে, এই পরিবর্তন ছিল (বৈজ্ঞানিক বিপ্লব) একটি ধারাবাহিক ঘটনা, যার সূচনাকাল ধরা হয় ১৫৪৩ খ্রিস্টাব্দে কোপার্নিকাসের ‘ On the Revolutions of the Celestial Spheres ’ নামক গ্রন্থ প্রকাশের সময়কে। মূলত এই সময় থেকেই আধুনিক বিজ্ঞানচর্চার জয়যাত্রার শুরু ধরা হয়। মানব সভ্যতার অগ্রগতির ইতিহাসে আধুনিক বিজ্ঞানের উদ্ভব ও তার প্রসার এক উল্লেখযোগ্য ও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। ১৪৫৩ সালের কনস্টান্টিনোপলের পতনের পর ইতালিকে কেন্দ্র করে ইউরোপে যে নবজাগরণের সূচনা হয়েছিল, তার ফলে আধুনিক বিজ্ঞানের উদ্ভব ঘটে। এরপর ষোড়শ ও সপ্তদশ শতকব্যাপি বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় ব্যাপক ও অভূতপূর্ব উন্নতি ঘটে। এই উন্নতির প্রভাবে কৃষি, শিল্প, সামরিক, মুদ্রণ, চিকিৎসা, মহাকাশ ও সমুদ্র বিজ্ঞানসহ বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় নতুন নতুন...

বিজ্ঞান কী?

বিজ্ঞান কী? বিজ্ঞান কী? বিজ্ঞান বলতে কী বোঝো? ‘ বিজ্ঞান ’ কথাটি এসেছে ইংরেজি ‘Science’ শব্দ থেকে। আর ‘Science’ কথাটি এসেছে ল্যাটিন শব্দ ‘ Scientia ’ শব্দ থেকে, যার অর্থ ‘বিশেষ জ্ঞান’ । এই বিশেষ জ্ঞান বা বিজ্ঞান হল প্রকৃতি ও সমাজ সম্পর্কিত সেই জ্ঞান বা সাধনা, যা পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রাকৃতিক ও সামাজিক ঘটনাবলীর ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ করে এবং প্রকৃত-সত্যে পৌঁছাতে সাহায্য করে। বিজ্ঞানের আবির্ভাব : পৃথিবীতে মানুষের আবির্ভাবের পর থেকেই বিজ্ঞানচর্চা শুরু হয়েছে। মানব সভ্যতার ক্রমবিবর্তনের সাথে সাথে এই চর্চা আধুনিক বিজ্ঞান সাধনায় রূপ নিয়েছে। এই আধুনিক বিজ্ঞান হল, প্রাকৃতিক ও সামাজিক ঘটনাবলী ও তাদের পারস্পরিক সম্পর্ক (কার্যকারণ সম্পর্ক) সম্বন্ধে শৃঙ্খলাবদ্ধ জ্ঞান লাভের প্রক্রিয়া বা পদ্ধতি। বিজ্ঞান সম্পর্কে সাধারণ ধারণা : বর্তমানে আমরা সাধারণভাবে বিজ্ঞান বলতে প্রাকৃতিক বিজ্ঞান ও তার বিভিন্ন শাখা যেমন পদার্থবিদ্যা, রসায়নবিদ্যা, জ্যোতির্বিদ্যা, ভূবিদ্যা, জীববিদ্যা, চিকিৎসাবিদ্যা, পূর্তবিদ্যা, কৃষিবিদ্যা, মনোবিদ্যা ইত্যাদিকে বুঝি। কিন্তু প্রকৃত অর্থে, জগ...

গৌরবময় বিপ্লব কাকে বলে?

গৌরবময় বিপ্লব কাকে বলে? গৌরবময় বিপ্লব কাকে বলে? গৌরবময় বিপ্লব : ‘গৌরবময় বিপ্লব’ হল ১৬৮৮-১৬৮৯ সালের মধ্যে সংঘটিত ইংল্যান্ডের কিছু ধারাবাহিক ঘটনা, যার ফলে রাজা দ্বিতীয় জেমস -এর পতন ঘটে এবং তাঁর জামাতা, হল্যান্ডের রাজা তৃতীয় উইলিয়াম (উইলিয়াম অফ অরেঞ্জ) এবং তাঁর স্ত্রী মেরি  যৌথভাবে ইংল্যান্ডের সিংহাসনে বসেন। গৌরবময় বিপ্লবের পটভূমি বা কারণ : রাজা দ্বিতীয় জেমস ছিলেন গোঁড়া ক্যাথলিক। তাঁর কঠোর রাজনৈতিক শাসন এবং ক্যাথলিক প্রভাবিত ধর্মীয় নীতি প্রোটেস্ট্যান্ট জনগণকে ক্ষুব্ধ করে তোলে। এই পরিস্থিতিতে, ১৬৮৮ সালে, জেমসের একটি পুত্র সন্তান জন্মালে প্রোটেস্ট্যান্টরা এই ভেবে উদ্বিগ্ন হন যে, দেশে আবার নতুন করে ক্যাথলিক সম্রাটের কঠোর শাসন শুরু হবে। এই পরিস্থিতিতে বিরোধী নেতারা প্রোটেস্ট্যান্ট ধর্মাবলম্বী হল্যান্ডের রাজা  উইলিয়াম অফ অরেঞ্জকে  ইংল্যান্ড আক্রমণের আমন্ত্রণ জানান। পরিস্থিতি বিবেচনা করে সম্রাট  দ্বিতীয় জেমস ফ্রান্সে পালিয়ে যান। এভাবে উইলিয়াম ও মেরি বিনা বাধায় ১৬৮৯ সালের এপ্রিল মাসে ইংল্যান্ডের সিংহাসনের দখল নেন। বিনা রক্তপাতে ঘটে যাওয়া এই অভূত...

সুফিবাদ কী? সুফিবাদের মূল কথা কী?

সুফিবাদ কী? সুফিবাদের মূল কথা কী? সুফিবাদ কী? সুফিবাদের মূল কথা কী? সুখীবাদ কী : ‘সুফি’ শব্দটি আরবি শব্দ ‘সফা’ থেকে এসেছে, যার অর্থ ‘ পবিত্রতা ’। এই অর্থে যিনি কায়মনোবাক্যে পবিত্র তিনিই সুফি। ‘সুফি’ শব্দের অন্য একটি অর্থ হল  ‘অকপটতা’ । এদিক থেকে বিচার করলে, যিনি কোন কপটতা বা মিথ্যার আশ্রয় নেন না, তিনিই সুফি। সুফিরা মূলত, হযরত মুহাম্মদ-এর মত সংযমী জীবনযাপন করাকে ঈশ্বরের নৈকট্য লাভের অন্যতম প্রধান উপায় বলে মনে করেন। এবং ইসলাম ও মানবতার সেবায় নিজেদের জীবন উৎসর্গ করাকে মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করেন। সেই সঙ্গে কাব্য, সঙ্গীত, নৃত্য ইত্যাদি মাধ্যমকে ঈশ্বর লাভের মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করেন।  সুতরাং, সুফিবাদ হল ভারতের তুর্কু-আফগান যুগে প্রচারিত ( ভক্তিবাদের মতো ) ইসলাম ধর্মের একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় সংস্কারকামী ও মানবতাবাদী ভাবধারা, যা ঐশ্বরিক প্রেম ও জ্ঞান সন্ধানের মাধ্যমে ঈশ্বরের সঙ্গে সরাসরি নৈকট্য লাভের চেষ্টা করে। আব্বারি-র মতে,  সুফিবাদ বলতে ধর্মপ্রাণ মুসলিমের ব্যক্তিগত অনুভূতির মাধ্যমে আল্লাহর জীবন্ত সান্নিধ্যদের উপলব্ধি বোঝায়। সুখীবাদের মূল কথা : মানবসেবা বা মানুষের প্রতি ভ...

ভক্তিবাদ কী? ভক্তিবাদের মূলকথা কী?

ভক্তিবাদ কী? ভক্তিবাদের মূলকথা কী? ভক্তিবাদ কী? ভক্তিবাদের মূলকথা কী? What is Bhaktiism? What is the essence of Bhaktiism? ভক্তিবাদ কী? ‘ভক্তিবাদ’ কথাটি এসেছে ‘ভক্তি’ শব্দ থেকে। আর ‘ভক্তি’ শব্দটি এসেছে সংস্কৃত ‘ভজ্’ ধাতু থেকে, যার অর্থ ‘ভজনা’ বা ‘নামগান’। আসলে, ভক্তি হল ভক্তের হৃদয়জাত এক সূক্ষ্ম ধর্মীয় অনুভূতি বা ভাবাবেগ, যেখান থেকে ঈশ্বরের প্রতি নিঃস্বার্থ আত্মসমর্পণ ও ঐকান্তিক ঈশ্বরপ্রেম জন্ম নেয়, এবং ভজনা বা নামগানের মাধ্যমে তা ঈশ্বরের কাছে পৌঁছায়। ত্রয়োদশ থেকে পঞ্চদশ শতকে (মধ্যযুগে) ভারতে একশ্রেণির মানবতাবাদী সাধকের জন্ম হয়, যারা হিন্দুধর্মের গোড়ামী, রক্ষণশীলতা, অস্পৃশ্যতা ও জাতিভেদের বিরুদ্ধে এবং মানুষের ইহলৌকিক মুক্তি লাভের উদ্দেশ্যে, ভারতীয় সমাজজীবনে মানবপ্রেম ও ভক্তি বা ভজনার মাধ্যমে ঈশ্বর লাভের বিধান দিয়ে যে ধর্মীয় আলোড়ন তুলেছিলেন তাকে ‘ভক্তি আন্দোলন’ বলা হয়। আর এই আন্দোলনকারীদের অনুসৃত পথ ও মতই হল ‘ ভক্তিবাদ’ । ভক্তি বাদের মূলকথা : ভক্তিবাদের মূলকথা (স্বরূপ) হল : ঈশ্বর এক ও অভিন্ন, সকল জীবের মধ্যেই ব্রহ্ম বা পরমাত্মা বিরাজ করে,  ভক্তিই মুক্তির একমাত্র পথ। তা...

মানবতাবাদ বলতে কী বোঝায়?

‘মানবতাবাদ’ বলতে কী বোঝায়? মানবতাবাদ বলতে কী বোঝায়? ‘হিউম্যানিজম’ বা ‘মানবতাবাদ’ কথাটি এসেছে ‘Humanitas’ নামক একটি ল্যাটিন শব্দ থেকে, যার অর্থ ‘ মানব প্রকৃতি, সভ্যতা এবং দয়া ’। আবার এই ল্যাটিন শব্দটি এসেছে ‘Hūmanus’ থেকে, যার অর্থ ‘মানুষ’। অর্থাৎ ‘মানবতাবাদ’ কথাটির মধ্যে রয়েছে মানবপ্রেম বা মানুষের কল্যাণের আকাঙ্ক্ষা। পঞ্চদশ শতকে ইউরোপীয় নবজাগরণের প্রভাবে একদল মানুষ ধর্ম, ও ধর্মীয় বিষয়কে প্রত্যাখ্যান করে মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সুখ-দুঃখ, হাসি কান্না প্রভৃতি বিষয়কে মূলধন করে তাঁরা তাঁদের সৃষ্টি-কর্মে মেতে ওঠেন। আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে জন্মদেন নতুন নতুন মানবহিতৈষী দর্শনের। মানবকল্যাণকে কেন্দ্রে রেখে গড়ে ওঠা এই দর্শন ‘ মানবতাবাদ ’ নামে পরিচিত। সুতরাং নবজাগরণের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হল এই মানবতাবাদ, যা আধুনিক যুগের অন্যতম প্রধান ভিত্তি বা শর্ত। আর মানবতাবাদের মূল কথা (বৈশিষ্ট্য) হল : পার্থিব জগতের কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন মানুষ। তাই মানুষের সুখ-স্বাচ্ছন্দ ও গুণাবলী বিকাশের উপর জোর দেওয়ার কথা বলা হয়।  মানুষকে দেওয়া হয় সর্বোচ্চ মর্যাদা , যা তার প্রা...

নবজাগরণের নেতিবাচক প্রভাব কী ছিল?

নবজাগরণের নেতিবাচক প্রভাব কী ছিল? নবজাগরণের নেতিবাচক প্রভাব কী ছিল? রেনেসাঁস বা নবজাগরণের ইতিবাচক ফলাফলের সাথে কিছু নেতিবাচক প্রভাবও লক্ষ্য করা যায়। অনেক ক্ষেত্রেই তা অর্থ-সামাজিক বৈষম্য ও রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি করেছে। সামাজিক বৈষম্য সৃষ্টি হয় : নবজাগরণের প্রভাবে ইউরোপীয় সমাজে অভিজাত শ্রেণীর প্রভাব প্রতিপত্তি বৃদ্ধি পেলেও দরিদ্র শ্রেণীর মানুষের জন্য সার্বিক সামাজিক উন্নয়ন সম্ভব হয়নি। অর্থনৈতিক বৈষম্য বাড়ে : নবজাগরণের প্রভাবে শিল্প বাণিজ্যের ব্যাপক উন্নতি ঘটলে সহরাঞ্চলের সম্পদের কেন্দ্রীভবন  ঘটে। ফলে গ্রামীণ কৃষকদের আর্থিক অবস্থার অবনতি ঘটে। নৈতিক অবক্ষয় শুরু হয় : নবজাগরণের সূত্র ধরে ধর্ম সংস্কার আন্দোলন মানুষের মধ্যে ধর্মের প্রতি অনাস্থা তৈরি করে।  ফলে মানুষ ধর্মীয় নৈতিকতা থেকে দূরে সরে যায় এবং সমাজে নৈতিক অবক্ষয় শুরু হয়। ধর্ম ও বিজ্ঞানের মধ্যে সংঘাত বাধে : নবজাগরণের প্রভাবে মানুষের মধ্যে বিজ্ঞান চেতনার প্রসার ঘটলে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলি তার বিরোধিতা করে। উভয়ের মধ্যে সংঘাত তৈরি হয় এবং বিজ্ঞান গবেষণা বাধাপ্রাপ্ত হয়। রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সংঘর্ষ : নবজাগরণকে কে...

অগসবার্গের সন্ধির শর্তগুলো কী ছিল?

অগসবার্গের সন্ধির শর্তগুলো কী ছিল? অগসবার্গের সন্ধির শর্তগুলো কী ছিল? অগসবার্গের সন্ধি : ধর্মসংস্কার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ইউরোপ মূলত দুটি ধর্ম সম্প্রদায় বিভক্ত হয়ে যায়। একদিকে রোমান ক্যাথলিক সম্প্রদায়, অন্যদিকে ছিল প্রটেস্টান্টরা। ১৫৩০ সালেক্যাথলিক ধর্মাবলম্বী পঞ্চম চার্লস প্রটেস্টেন্ডের ক্যাথলিক চার্চ-এর কাছে আত্মসমর্পণ করার প্রস্তাব দেন। কিন্তু ১৫৩১ খ্রিস্টাব্দে ক্যাথলিক সম্রাট পঞ্চম চার্লসের বিরুদ্ধে প্রোটেস্টানরা রাজারা যুদ্ধ ঘোষণা করে। শেষ পর্যন্ত এই যুদ্ধে সম্রাট পঞ্চম চাল পরাজিত হন। এই প্রেক্ষাপটে ১৫৫৫ সালে প্রোটেস্ট্যান্ট রাজাদের সঙ্গে তিনি সন্ধি করতে বাধ্য হন। এই সন্ধি অগসবার্গের সন্ধি নামে পরিচিত। অগসবার্গের সন্ধির শর্ত : এই সন্ধির দ্বারা : প্রোটেস্ট্যান্ট চার্চ আইনগত বৈধতা লাভ করে,  রাজার ধর্ম প্রচার ধর্ম বলে স্বীকৃত হয়,  বলা হয়, প্রচেস্ট অ্যান্ড চার্চের বিষয় ও অ্যাওয়ার্ড এবং প্রটেস্ট্যান্ট প্রজাদের উপর কোন অত্যাচার করা হবে না। যেসব প্রজা রাজার ধর্ম ধর্মকে নিজের ধর্ম বলে মেনে নেবে না তাদের দেশ ত্যাগ করার সুযোগ দিতে হবে। যেকোনো ধর্মীয় বিরোধ আলাপ আলোচনার মাধ...

ইউরোপীয় ধর্মসংস্কার আন্দোলন কী?

 ধর্মসংস্কার আন্দোলন কী? ইউরোপীয় ধর্মসংস্কার আন্দোলন কী? খ্রিস্টধর্মের প্রবর্তক যীশুখ্রীষ্টের হাত ধরেই রোমান ক্যাথোলিক চার্চের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। এই চার্চের প্রধান হলেন পোপ। এবং তিনিই খ্রিস্টান ধর্মের প্রধান ধর্মগুরু। পোপকে কেন্দ্র করে পরিচালিত ক্যাথলিক চার্চ এবং তার ব্যবস্থাপানাকে এক কথায় বলা হয় পোপতন্ত্র । মধ্যযুগের শেষ দিকে, খ্রিস্টীয় ষোড়শ শতকে, পোপতন্ত্র অত্যন্ত দুর্নীতি , অনাচার ও কুসংস্কারে ভরে ওঠে। চার্চের যাজকেরা স্বৈরাচারী মনোভাব নিয়ে সাধারণ মানুষের উপর বিভিন্নভাবে শোষণ ও নির্যাতন চালাতে থাকে। যে সংস্থা সাধারণ মানুষের আধ্যাত্মিক মঙ্গলের উদ্দেশ্যে তার কার্যকলাপ পরিচালনা করতো, তা ক্রমে হয়ে ওঠে অমঙ্গলের প্রতীক।  এমত অবস্থায়, ১৫ শতকে নবজাগরণের প্রভাবে ইউরোপের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক জীবনে পরিবর্তনের সাথে সাথে ধর্মীয় জীবনেও এক বিরাট পরিবর্তন আসে। এই সময়ে মানুষের মধ্যে যুক্তিবাদী চিন্তাভাবনার প্রসার ঘটলে তাদের চিন্তাজগতে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। এর ফলে সাধারণ মানুষ ক্রমে চার্চ ও যাজকদের দুর্নীতি সম্পর্কে অবহিত হয়ে ওঠে। এবং এ কারণে তারা চার্চের সংস্কার ও সংশ...

ক্রুসেডের প্রত্যক্ষ কারণ কী ছিল?

ক্রুসেডের প্রত্যক্ষ কারণ কী ছিল? ক্রুসেডের প্রত্যক্ষ কারণ কী ছিল? ১০৭১ সালে ‘ মেঞ্জিকার্টের যুদ্ধে ’ বাইজানটাইন সম্রাট চতুর্থ রোমানোস  তুর্কি সুলতান আলপ আর্সনালের কাছে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হন। ফলে আনাতোলিয়া সহ সমগ্র প্যালেস্টাইন সম্রাটের হস্তচ্যুত হয়। পরবর্তীকালে সম্রাট আলেক্সিয়াস কমনিনাস সেলজুক তুর্কিদের হাত থেকে খ্রিস্টান ধর্ম ও রোমের সিংহাসন বাঁচানোর তাগিদে পোপ সপ্তম গ্রেগোরির কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন। কিন্তু ইচ্ছা থাকলেও পোপ সপ্তম গ্রেগরি কিছুই করে উঠতে পারেননি। ১০৯১ সালে পোপ দ্বিতীয় আরবান  সম্রাটের আহবানে সাড়া দেন। পোপের লক্ষ্য ছিল সম্রাটের এই সংকটকালে ধর্মযুদ্ধের ডাক দিয়ে খ্রিস্টান জগতে তাঁর নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব স্থাপন করা। মূলত এই উদ্দেশ্য নিয়েই ১০৯৫ সালে ফ্রান্সের ক্লেরমন্ট শহরে এক ধর্মসভা আহ্বান করেন। এই সভায় ও দ্বিতীয় আরবান পবিত্র তীর্থভূমি জেরুজালেম উদ্ধারের লক্ষ্যে সমস্ত স্তরের খ্রিস্টানদের ধর্ম যুদ্ধে আহ্বান করেন। ফলে, জেরুজালেম পুনরুদ্ধার করাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়ে যায় ক্রুসেড, যা প্রায় দীর্ঘ দুশো বছর ধরে ইউরোপকে অশান্ত করে রেখেছিল। সুতরাং রোমান সম...

ক্রুসেড কী? ক্রুসেডের উদ্দেশ্য কী ছিল?

ক্রুসেড কী? ক্রুসেডের উদ্দেশ্য কী ছিল? ক্রুসেড বলতে কী বোঝো? ক্রুসেড কী? ক্রুসেডের উদ্দেশ্য কী ছিল? ‘ ক্রুসেড ’ কথার অর্থ হলো ধর্মযুদ্ধ। খ্রিস্টধর্মের প্রবর্তক যীশু খ্রীষ্টের জন্মস্থান হিসেবে খ্যাত জেরুজালেম খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী মানুষের কাছে ‘ পবিত্র ভূমি ’ বলে বিবেচিত হয়।  কিন্তু ইসলাম ধর্মের আবির্ভাবের পর প্রথমে খলিফা ওমর জেরুজালেম এবং পরবর্তীকালে ১০৭১ সালে তুর্কি শাসক আলাপ আর্সলান জেরুজালেম সহ সমগ্র প্যালেস্টাইন দখল করে নেয়। ইউরোপের খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বী শাসক আলেক্সিয়াস কমনিনাস ও পোপ দ্বিতীয় আরবান এই পবিত্র ভূমি পুনরুদ্ধারের উদ্দেশ্যে তুর্কি সুলতানদের বিরুদ্ধে ১০৯৬ থেকে ১২৯১ সাল পর্যন্ত প্রায় ২০০ বছর ধরে যুদ্ধ অভিযান পরিচালনা করে। এই ধর্মীয় যুদ্ধ অভিযান ‘ ক্রুসেড ’ বা ‘ ধর্মযুদ্ধ ’ নামে পরিচিত।  ক্রুসেডের উদ্দেশ্য : সুতরাং ক্রুসেডের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল তুর্কিদের হাত থেকে জেরুজালেম উদ্ধার ও তার পবিত্রতা রক্ষা করা । তবে, ক্রুসেডের কারণ বিশ্লেষণ করলে এর আরও কিছু উদ্দেশ্য স্পষ্ট হয়ে ওঠে : পূর্ব রোমান সাম্রাজ্যকে তুর্কিদের হাত থেকে রক্ষা করা, পোপের হারানো গৌরব ও মর্...

টমাস ক্রমওয়েল কে ছিলেন?

টমাস ক্রমওয়েল কে ছিলেন? টমাস ক্রমওয়েল কে ছিলেন? টমাস ক্রমওয়েল ছিলেন একজন কর্মকারের সন্তান। প্রথম জীবনে তাঁর পেশা ছিল সৈনিকবৃত্তি। পরবর্তীতে আইন পাস করে শুরু করেন আইন ব্যবসা। অষ্টম হেনরির রাজত্বকালে তিনি বৃটেনের কমন্স সভার সদস্যপদ লাভ করেন ১৫৩৩ সালে অষ্টম হেনরি কর্তৃক ভিকার জেনারেল বা মুখ্য ধর্মীয় আধিকারিক নিযুক্ত হন। অষ্টম হেনরির সমর্থনে অ্যাক্ট অফ অ্যানেটস, অ্যাক্ট অফ অ্যাপিলস, অ্যাক্ট অফ সাকসেশন, অ্যাক্ট অফ সুপ্রিমেসি, ট্ৰিজন, অ্যাক্ট অফ প্লুরালিটিস ইত্যাদি আইনের মাধ্যমে তিনি ইংল্যান্ডের শাসন ও ধর্ম ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার সাধন করেন । তাঁর এই সংস্কারের ফলে ইংল্যান্ডের আধুনিক শাসনতান্ত্রিক কাঠামোর বিকাশ ঘটে। যেমন , ইংল্যান্ডের চার্চ ও রাষ্ট্র —উভয়ের ওপর রাজার সার্বভৌমত্ব স্থাপিত হয় পোপের ক্ষমতা খর্ব করা হয়। শাসনতান্ত্রিক কাঠামোয় রাজার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় পার্লামেন্ট বিভিন্ন অধিকার লাভ করে। এইভাবে, ১) ইংল্যান্ডের শাসন ব্যবস্থায় রাজা ও পার্লামেন্টের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠিত হয়। ২) রাজনীতিতে পোপের প্রভাব কমে যায়। ঐতিহাসিক জি আর এলটন  এই পরিবর্তন গুলির প্রকৃত গু...

অষ্টম হেনরি কে ছিলেন?

অষ্টম হেনরি কে ছিলেন? অষ্টম হেনরি কে ছিলেন? অষ্টম হেনরি হলেন ইংল্যান্ডের টিউটর বংশের দ্বিতীয় রাজা। ১৫০৯ সালে পিতা সপ্তম হেনরির মৃত্যুর পর তিনি ইংল্যান্ডের সিংহাসনে বসেন। তাঁর আমলে টিউডর রাজতন্ত্র একটি শক্তিশালী রাজতন্ত্রে পরিণত হয়। আর এজন্যে তাঁকে নতুন রাজতন্ত্রের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা বলা হয়। অষ্টম হেনরি তাঁর উপদেষ্টা মন্ত্রী টমাস ক্রমওয়েলকে দিয়ে ইংল্যান্ডের শাসন ও ধর্ম ব্যবস্থায় বেশ কিছু যুগান্তকারী সংস্কার সাধন করেন। অ্যাক্ট অফ অ্যানেটস, অ্যাক্ট অফ অ্যাপিলস, অ্যাক্ট অফ সাকসেশন, অ্যাক্ট অফ সুপ্রিমেসি, ট্ৰিজন, অ্যাক্ট অফ প্লুরালিটিস ইত্যাদি আইনের মাধ্যমে তিনি এই সংস্কার কার্যকর করেন। তাঁর এই সংস্কারের ফলে ইংল্যান্ডের আধুনিক শাসনতান্ত্রিক কাঠামোর বিকাশ ঘটে। এই শাসনতান্ত্রিক কাঠামোর একদিকে ছিল ইংল্যান্ডের রাজার ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়া, অপরদিকে ছিল পার্লামেন্টকে বিভিন্ন অধিকার দেওয়া হয় ঘটনা। এভাবে অষ্টম হেনরির শাসনতান্ত্রিক ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠিত হয়। --------xx------- বিকল্প প্রশ্ন সমূহ : কাকে কেন নতুন রাজতন্ত্রের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা বলা হয়? কোন কোন আইনের মাধ্যমে নতুন রাজতন্ত্রকে শ...

‘নব্য রাজতন্ত্র’ বলতে কী বোঝো?

‘নব্য রাজতন্ত্র’ বলতে কী বোঝো? ‘নব্য রাজতন্ত্র’ বলতে কী বোঝো? ইংল্যান্ডের টিউটর বংশীয় শাসক সপ্তম হেনরি (হেনরি টিউডর) ১৪৮৫ সালে ইংল্যান্ডে যে রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন তাকে নতুন রাজতন্ত্র বা নব্য রাজতন্ত্র বলা হয়। কারণ, তিনি ইংল্যান্ডের সংবিধান বা শাসনতান্ত্রে বেশ কিছু অভিনব পরিবর্তন এনেছিলেন। এই পরিবর্তনগুলো নব্য রাজতন্ত্রের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হিসেবে বিবেচিত হয়। এই পরিবর্তনগুলো (বা বৈশিষ্ট্য) হল : ইংল্যান্ডের শাসনব্যবস্থায়  ব্যারন ও সামন্ত প্রভুদের ক্ষমতা হ্রাস করে ,  পার্লামেন্টের ক্ষমতা বৃদ্ধি  করা হয়, ইংল্যান্ডের যুক্তিবাদ চিন্তা চেতনার প্রসার ঘটানো হয় এবং  ধর্ম সংস্কার আন্দোলনকে উৎসাহিত করা হয় । ফলে জন্ম নেয় প্রোটেস্ট্যান্ট ধর্মীয় মতবাদ। সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে  মধ্যবিত্ত শ্রেণীর ক্ষমতা ও মর্যাদা  বৃদ্ধি করা হয়,   বিচার বিভাগের মর্যাদা বৃদ্ধির চেষ্টা করা হয়।   বিচার ব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা হয়। ‘ অ্যাক্ট  অফ সুপ্রিমেসি ’ পাস করার মাধ্যমে ইংল্যান্ডের চার্চ ও রাষ্ট্র —উভয়ের ওপর রাজার সার্বভ...

‘অ্যাক্ট অফ সুপ্রিমেসি’ কী?

‘অ্যাক্ট  অফ সুপ্রিমেসি’ কী? অ্যাক্ট অফ সুপ্রিমেসি’ কী? অ্যাক্ট অফ সুপ্রিমেসি : ‘ অ্যাক্ট অফ সুপ্রিমেসি ’ (Act of Supremacy) হল একটি ধর্মীয় সংস্কার আইন, যা ইংল্যান্ডের রাজা অষ্টম হেনরি তাঁর প্রধান ধর্মীয় আধিকারিক টমাস ক্রমওয়েলের  নেতৃত্বে পাস করেন।  এই আইনের উদ্দেশ্য ছিল আনুষ্ঠানিকভাবে রাজাকে দেশের ধর্মব্যবস্থার প্রধান হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া। অ্যাক্ট অফ সুপ্রিমেসির উদ্দেশ্য : এই আইন পাশের আগে পর্যন্ত ইংল্যান্ডের চার্চ-এর উপর পোপের একাধিপত্য ছিল। ফলে পোপ পরোক্ষভাবে রাজাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারত। ‘ অ্যাক্ট   অফ সুপ্রিমেসি ’র মাধ্যমে — ইংল্যান্ডের চার্চগুলোর উপর পোপের এই আধিপত্য লুপ্ত করা হয়। ছোট ছোট মঠগুলোকে বাজেয়াপ্ত করা হয় এবং বড় মাঠ গুলোর ওপর রাজা তথা রাষ্ট্রের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করা হয়। অ্যাক্ট অফ সুপ্রিমেসির গুরুত্ব : এভাবে,  ‘ অ্যাক্ট  অফ সুপ্রিমেসি ’ পাস করার মাধ্যমে ইংল্যান্ডের চার্চ ও রাষ্ট্র —উভয়ের ওপর রাজার সার্বভৌমত্ব স্থাপিত হয় এবং পোপের ক্ষমতা খর্ব করা হয়। ----------xx------- বিকল্প প্রশ্ন সমূহ : ‘ অ্যাক্ট অফ সুপ্রিমেসি ’ কী ধরনের আই...

সপ্তম হেনরি কে ছিলেন?

সপ্তম হেনরি কে ছিলেন? সপ্তম হেনরি কে ছিলেন? সপ্তম হেনরি ছিলেন ইংল্যান্ডের টিউডর বংশের প্রথম রাজা, যার প্রকৃত নাম ছিল হেনরি টিউডর। ১৪৮৫ থেকে ১৫০৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি ইংল্যান্ডের রাজা ছিলেন। দীর্ঘ ৩০ বছরের যুদ্ধে, যা ইংল্যান্ডের ইতিহাসের ‘ গোলাপের যুদ্ধ’ নামে খ্যাত, ইয়র্ক বংশীয় রাজা তৃতীয় রিচার্ডকে পরাজিত করে ১৪৮৫ সালে ইংল্যান্ডের সিংহাসনে বসেন। শুরু হয় ইংল্যান্ডে নতুন রাজতন্ত্রের যুগ। এই নতুন রাজতন্ত্র ‘ নিয়মতান্ত্রিক রাজতন্ত্র ’ বা ‘ নব্য রাজতন্ত্র ’ নামে পরিচিত। প্রকৃতপক্ষে তাঁর হাত ধরেই ইংল্যান্ডে নিয়মতান্ত্রিক রাজতন্ত্রের পথ চলা শুরু হয়। এইসময় তিনি কয়েকটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। ইংল্যান্ডের শাসন ব্যবস্থায় ব্যারন ও সামন্ত প্রভুদের ক্ষমতা হ্রাস , পার্লামেন্টের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, ইংল্যান্ডের যুক্তিবাদ মাথা তুলে দাঁড়ায়।  তারই সূত্র ধরে শুরু হয় ধর্ম সংস্কার আন্দোলন । জন্ম নেয় প্রোটেস্ট্যান্ট ধর্মীয় মতবাদ। শাসন ব্যবস্থায় মধ্যবিত্ত শ্রেণীর ক্ষমতা ও মর্যাদা বৃদ্ধি পায়,   বিচার বিভাগের মর্যাদা বৃদ্ধি পায় এবং বিচার ব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষ...

সিসেরো কে ছিলেন?

 সিসেরো কে ছিলেন? সিসেরো কে ছিলেন? সিসেরোর পুরো নাম মার্কাস টিউলিয়াস সিসেরো । জন্ম ১০৬ খৃষ্টপূর্বাব্দে ইতালির আর্পিনো শহরে। তিনি ছিলেন একাধারে প্রাচীন রোমের একজন প্রখ্যাত রাষ্ট্রচিন্তাবিদ, রাজনীতিবিদ, আইনজ্ঞ, শ্রেষ্ঠ গদ্য শিল্পী ও সুবক্তা। খ্রিস্টপূর্ব ৭৯ সালে তিনি এথেন্সে আসেন এবং হেরোডেটাস , থুকিডিটিস , প্লেটো ও অ্যারিস্টটলের ইতিহাস ও দর্শনের চর্চা শুরু করেন এবং মুগ্ধ হন। তাঁদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে লেখেন দুটি বিখ্যাত গ্রন্থ — দ্য রিপাবলিক (The Republic) এবং দা লস (The Laws)। সিসেরোর এই দুটো গ্রন্থ থেকে আমরা জানতে পারি তাঁর রাষ্ট্রচিন্তার বৈশিষ্ট্য ও ধারা সম্পর্কে। জানতে পারি,  ১) রাষ্ট্র একটি নৈতিক ও যৌথ সংস্থা এবং প্রত্যেক নাগরিকের সদস্য, ২) রাষ্ট্রের লক্ষ্য হলো নাগরিকদের সুশাসন এবং নিরাপত্তা প্রদান করা, ৩) নাগরিকদের ঐক্যবোধ দায়বদ্ধতা এবং অধিকারের ওপর রাষ্ট্রের স্থায়িত্ব নির্ভর করে, ৪) প্রাকৃতিক আইনের উপর নির্ভর করে রাষ্ট্রীয় আইন তৈরি ও পরিচালনা করলে রাষ্ট্রে অরাজগতা থাকে না।  প্রকৃতপক্ষে, সিসেরো রাষ্ট্রচিন্তার জগতে এক নব দিগন্তের উন্মোচন ঘটিয়েছিলেন। ঐ...

জিয়াউদ্দিন বারনি কে ছিলেন?

জিয়াউদ্দিন বারনি কে ছিলেন? জিয়াউদ্দিন বারনি কে ছিলেন? জিয়াউদ্দিন বারনি ছিলেন সুলতানি যুগের একজন সর্বশ্রেষ্ঠ ঐতিহাসিক ও রাষ্ট্রচিন্তাবিদ। তুর্কিস্তানের এক অভিজাত পরিবারে তাঁর জন্ম হয় ১২৮৫ খ্রিস্টাব্দে। এই পরিবার তিন প্রজন্ম ধরে সুলতানি শাসকদের অধীনে কর্মরত ছিলেন। জিয়াউদ্দিন বারানি নিজে মোহাম্মদ বিন তুঘলক ও ফিরোজ শাহ তুঘলকের সভাসদ ও নাদিম হিসেবে পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তবে তিনি সবচেয়ে খ্যাতি অর্জন করেছেন সুলতানি যুগের একজন প্রখ্যাত ঐতিহাসিক ও রাষ্ট্রচিন্তাবিদ হিসাবে। তার লেখা, ‘ তারিখ-ই ফিরোজশাহী’ এবং ‘ ফতোয়া ই জাহান্দারি’ গ্রন্থ দুটি তৎকালীন ভারতের ইতিহাস রচনায় গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই গন্ধ দুটি থেকে সুলতানি আমলের রাজনৈতিক ঘটনা ও শাসননীতির বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া যায়। তারিখ ই ফিরোজশাহী গ্রন্থে বরণী সুলতানদের নীতি ও চরিত্রের বিচার করেছেন। এবং ফাতওয়া ই জাহান্দারী গ্রন্থে রাষ্ট্রনীতি এবং সুলতানি রাষ্ট্রের প্রকৃতি সম্পর্কে তার অভিমত ব্যক্ত করেছেন। তার এই বিবরণ অনুযায়ী সুলতানি যুগের রাষ্ট্র ব্যবস্থার প্রকৃতি ছিল জাহান্দারী অর্থাৎ ধর্মনিরপেক্ষ। ---------xx--------