সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

প্রশ্নের মান - ৩ লেবেল থাকা পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

ইউরোপীয় ধর্মসংস্কার আন্দোলন কী?

 ধর্মসংস্কার আন্দোলন কী? ইউরোপীয় ধর্মসংস্কার আন্দোলন কী? খ্রিস্টধর্মের প্রবর্তক যীশুখ্রীষ্টের হাত ধরেই রোমান ক্যাথোলিক চার্চের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। এই চার্চের প্রধান হলেন পোপ। এবং তিনিই খ্রিস্টান ধর্মের প্রধান ধর্মগুরু। পোপকে কেন্দ্র করে পরিচালিত ক্যাথলিক চার্চ এবং তার ব্যবস্থাপানাকে এক কথায় বলা হয় পোপতন্ত্র । মধ্যযুগের শেষ দিকে, খ্রিস্টীয় ষোড়শ শতকে, পোপতন্ত্র অত্যন্ত দুর্নীতি , অনাচার ও কুসংস্কারে ভরে ওঠে। চার্চের যাজকেরা স্বৈরাচারী মনোভাব নিয়ে সাধারণ মানুষের উপর বিভিন্নভাবে শোষণ ও নির্যাতন চালাতে থাকে। যে সংস্থা সাধারণ মানুষের আধ্যাত্মিক মঙ্গলের উদ্দেশ্যে তার কার্যকলাপ পরিচালনা করতো, তা ক্রমে হয়ে ওঠে অমঙ্গলের প্রতীক।  এমত অবস্থায়, ১৫ শতকে নবজাগরণের প্রভাবে ইউরোপের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক জীবনে পরিবর্তনের সাথে সাথে ধর্মীয় জীবনেও এক বিরাট পরিবর্তন আসে। এই সময়ে মানুষের মধ্যে যুক্তিবাদী চিন্তাভাবনার প্রসার ঘটলে তাদের চিন্তাজগতে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। এর ফলে সাধারণ মানুষ ক্রমে চার্চ ও যাজকদের দুর্নীতি সম্পর্কে অবহিত হয়ে ওঠে। এবং এ কারণে তারা চার্চের সংস্কার ও সংশ...

ক্রুসেডের প্রত্যক্ষ কারণ কী ছিল?

ক্রুসেডের প্রত্যক্ষ কারণ কী ছিল? ক্রুসেডের প্রত্যক্ষ কারণ কী ছিল? ১০৭১ সালে ‘ মেঞ্জিকার্টের যুদ্ধে ’ বাইজানটাইন সম্রাট চতুর্থ রোমানোস  তুর্কি সুলতান আলপ আর্সনালের কাছে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হন। ফলে আনাতোলিয়া সহ সমগ্র প্যালেস্টাইন সম্রাটের হস্তচ্যুত হয়। পরবর্তীকালে সম্রাট আলেক্সিয়াস কমনিনাস সেলজুক তুর্কিদের হাত থেকে খ্রিস্টান ধর্ম ও রোমের সিংহাসন বাঁচানোর তাগিদে পোপ সপ্তম গ্রেগোরির কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন। কিন্তু ইচ্ছা থাকলেও পোপ সপ্তম গ্রেগরি কিছুই করে উঠতে পারেননি। ১০৯১ সালে পোপ দ্বিতীয় আরবান  সম্রাটের আহবানে সাড়া দেন। পোপের লক্ষ্য ছিল সম্রাটের এই সংকটকালে ধর্মযুদ্ধের ডাক দিয়ে খ্রিস্টান জগতে তাঁর নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব স্থাপন করা। মূলত এই উদ্দেশ্য নিয়েই ১০৯৫ সালে ফ্রান্সের ক্লেরমন্ট শহরে এক ধর্মসভা আহ্বান করেন। এই সভায় ও দ্বিতীয় আরবান পবিত্র তীর্থভূমি জেরুজালেম উদ্ধারের লক্ষ্যে সমস্ত স্তরের খ্রিস্টানদের ধর্ম যুদ্ধে আহ্বান করেন। ফলে, জেরুজালেম পুনরুদ্ধার করাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়ে যায় ক্রুসেড, যা প্রায় দীর্ঘ দুশো বছর ধরে ইউরোপকে অশান্ত করে রেখেছিল। সুতরাং রোমান সম...

ক্রুসেড কী? ক্রুসেডের উদ্দেশ্য কী ছিল?

ক্রুসেড কী? ক্রুসেডের উদ্দেশ্য কী ছিল? ক্রুসেড বলতে কী বোঝো? ক্রুসেড কী? ক্রুসেডের উদ্দেশ্য কী ছিল? ‘ ক্রুসেড ’ কথার অর্থ হলো ধর্মযুদ্ধ। খ্রিস্টধর্মের প্রবর্তক যীশু খ্রীষ্টের জন্মস্থান হিসেবে খ্যাত জেরুজালেম খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী মানুষের কাছে ‘ পবিত্র ভূমি ’ বলে বিবেচিত হয়।  কিন্তু ইসলাম ধর্মের আবির্ভাবের পর প্রথমে খলিফা ওমর জেরুজালেম এবং পরবর্তীকালে ১০৭১ সালে তুর্কি শাসক আলাপ আর্সলান জেরুজালেম সহ সমগ্র প্যালেস্টাইন দখল করে নেয়। ইউরোপের খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বী শাসক আলেক্সিয়াস কমনিনাস ও পোপ দ্বিতীয় আরবান এই পবিত্র ভূমি পুনরুদ্ধারের উদ্দেশ্যে তুর্কি সুলতানদের বিরুদ্ধে ১০৯৬ থেকে ১২৯১ সাল পর্যন্ত প্রায় ২০০ বছর ধরে যুদ্ধ অভিযান পরিচালনা করে। এই ধর্মীয় যুদ্ধ অভিযান ‘ ক্রুসেড ’ বা ‘ ধর্মযুদ্ধ ’ নামে পরিচিত।  ক্রুসেডের উদ্দেশ্য : সুতরাং ক্রুসেডের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল তুর্কিদের হাত থেকে জেরুজালেম উদ্ধার ও তার পবিত্রতা রক্ষা করা । তবে, ক্রুসেডের কারণ বিশ্লেষণ করলে এর আরও কিছু উদ্দেশ্য স্পষ্ট হয়ে ওঠে : পূর্ব রোমান সাম্রাজ্যকে তুর্কিদের হাত থেকে রক্ষা করা, পোপের হারানো গৌরব ও মর্...

টমাস ক্রমওয়েল কে ছিলেন?

টমাস ক্রমওয়েল কে ছিলেন? টমাস ক্রমওয়েল কে ছিলেন? টমাস ক্রমওয়েল ছিলেন একজন কর্মকারের সন্তান। প্রথম জীবনে তাঁর পেশা ছিল সৈনিকবৃত্তি। পরবর্তীতে আইন পাস করে শুরু করেন আইন ব্যবসা। অষ্টম হেনরির রাজত্বকালে তিনি বৃটেনের কমন্স সভার সদস্যপদ লাভ করেন ১৫৩৩ সালে অষ্টম হেনরি কর্তৃক ভিকার জেনারেল বা মুখ্য ধর্মীয় আধিকারিক নিযুক্ত হন। অষ্টম হেনরির সমর্থনে অ্যাক্ট অফ অ্যানেটস, অ্যাক্ট অফ অ্যাপিলস, অ্যাক্ট অফ সাকসেশন, অ্যাক্ট অফ সুপ্রিমেসি, ট্ৰিজন, অ্যাক্ট অফ প্লুরালিটিস ইত্যাদি আইনের মাধ্যমে তিনি ইংল্যান্ডের শাসন ও ধর্ম ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার সাধন করেন । তাঁর এই সংস্কারের ফলে ইংল্যান্ডের আধুনিক শাসনতান্ত্রিক কাঠামোর বিকাশ ঘটে। যেমন , ইংল্যান্ডের চার্চ ও রাষ্ট্র —উভয়ের ওপর রাজার সার্বভৌমত্ব স্থাপিত হয় পোপের ক্ষমতা খর্ব করা হয়। শাসনতান্ত্রিক কাঠামোয় রাজার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় পার্লামেন্ট বিভিন্ন অধিকার লাভ করে। এইভাবে, ১) ইংল্যান্ডের শাসন ব্যবস্থায় রাজা ও পার্লামেন্টের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠিত হয়। ২) রাজনীতিতে পোপের প্রভাব কমে যায়। ঐতিহাসিক জি আর এলটন  এই পরিবর্তন গুলির প্রকৃত গু...

অষ্টম হেনরি কে ছিলেন?

অষ্টম হেনরি কে ছিলেন? অষ্টম হেনরি কে ছিলেন? অষ্টম হেনরি হলেন ইংল্যান্ডের টিউটর বংশের দ্বিতীয় রাজা। ১৫০৯ সালে পিতা সপ্তম হেনরির মৃত্যুর পর তিনি ইংল্যান্ডের সিংহাসনে বসেন। তাঁর আমলে টিউডর রাজতন্ত্র একটি শক্তিশালী রাজতন্ত্রে পরিণত হয়। আর এজন্যে তাঁকে নতুন রাজতন্ত্রের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা বলা হয়। অষ্টম হেনরি তাঁর উপদেষ্টা মন্ত্রী টমাস ক্রমওয়েলকে দিয়ে ইংল্যান্ডের শাসন ও ধর্ম ব্যবস্থায় বেশ কিছু যুগান্তকারী সংস্কার সাধন করেন। অ্যাক্ট অফ অ্যানেটস, অ্যাক্ট অফ অ্যাপিলস, অ্যাক্ট অফ সাকসেশন, অ্যাক্ট অফ সুপ্রিমেসি, ট্ৰিজন, অ্যাক্ট অফ প্লুরালিটিস ইত্যাদি আইনের মাধ্যমে তিনি এই সংস্কার কার্যকর করেন। তাঁর এই সংস্কারের ফলে ইংল্যান্ডের আধুনিক শাসনতান্ত্রিক কাঠামোর বিকাশ ঘটে। এই শাসনতান্ত্রিক কাঠামোর একদিকে ছিল ইংল্যান্ডের রাজার ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়া, অপরদিকে ছিল পার্লামেন্টকে বিভিন্ন অধিকার দেওয়া হয় ঘটনা। এভাবে অষ্টম হেনরির শাসনতান্ত্রিক ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠিত হয়। --------xx------- বিকল্প প্রশ্ন সমূহ : কাকে কেন নতুন রাজতন্ত্রের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা বলা হয়? কোন কোন আইনের মাধ্যমে নতুন রাজতন্ত্রকে শ...

‘নব্য রাজতন্ত্র’ বলতে কী বোঝো?

‘নব্য রাজতন্ত্র’ বলতে কী বোঝো? ‘নব্য রাজতন্ত্র’ বলতে কী বোঝো? ইংল্যান্ডের টিউটর বংশীয় শাসক সপ্তম হেনরি (হেনরি টিউডর) ১৪৮৫ সালে ইংল্যান্ডে যে রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন তাকে নতুন রাজতন্ত্র বা নব্য রাজতন্ত্র বলা হয়। কারণ, তিনি ইংল্যান্ডের সংবিধান বা শাসনতান্ত্রে বেশ কিছু অভিনব পরিবর্তন এনেছিলেন। এই পরিবর্তনগুলো নব্য রাজতন্ত্রের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হিসেবে বিবেচিত হয়। এই পরিবর্তনগুলো (বা বৈশিষ্ট্য) হল : ইংল্যান্ডের শাসনব্যবস্থায়  ব্যারন ও সামন্ত প্রভুদের ক্ষমতা হ্রাস করে ,  পার্লামেন্টের ক্ষমতা বৃদ্ধি  করা হয়, ইংল্যান্ডের যুক্তিবাদ চিন্তা চেতনার প্রসার ঘটানো হয় এবং  ধর্ম সংস্কার আন্দোলনকে উৎসাহিত করা হয় । ফলে জন্ম নেয় প্রোটেস্ট্যান্ট ধর্মীয় মতবাদ। সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে  মধ্যবিত্ত শ্রেণীর ক্ষমতা ও মর্যাদা  বৃদ্ধি করা হয়,   বিচার বিভাগের মর্যাদা বৃদ্ধির চেষ্টা করা হয়।   বিচার ব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা হয়। ‘ অ্যাক্ট  অফ সুপ্রিমেসি ’ পাস করার মাধ্যমে ইংল্যান্ডের চার্চ ও রাষ্ট্র —উভয়ের ওপর রাজার সার্বভ...

‘অ্যাক্ট অফ সুপ্রিমেসি’ কী?

‘অ্যাক্ট  অফ সুপ্রিমেসি’ কী? অ্যাক্ট অফ সুপ্রিমেসি’ কী? অ্যাক্ট অফ সুপ্রিমেসি : ‘ অ্যাক্ট অফ সুপ্রিমেসি ’ (Act of Supremacy) হল একটি ধর্মীয় সংস্কার আইন, যা ইংল্যান্ডের রাজা অষ্টম হেনরি তাঁর প্রধান ধর্মীয় আধিকারিক টমাস ক্রমওয়েলের  নেতৃত্বে পাস করেন।  এই আইনের উদ্দেশ্য ছিল আনুষ্ঠানিকভাবে রাজাকে দেশের ধর্মব্যবস্থার প্রধান হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া। অ্যাক্ট অফ সুপ্রিমেসির উদ্দেশ্য : এই আইন পাশের আগে পর্যন্ত ইংল্যান্ডের চার্চ-এর উপর পোপের একাধিপত্য ছিল। ফলে পোপ পরোক্ষভাবে রাজাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারত। ‘ অ্যাক্ট   অফ সুপ্রিমেসি ’র মাধ্যমে — ইংল্যান্ডের চার্চগুলোর উপর পোপের এই আধিপত্য লুপ্ত করা হয়। ছোট ছোট মঠগুলোকে বাজেয়াপ্ত করা হয় এবং বড় মাঠ গুলোর ওপর রাজা তথা রাষ্ট্রের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করা হয়। অ্যাক্ট অফ সুপ্রিমেসির গুরুত্ব : এভাবে,  ‘ অ্যাক্ট  অফ সুপ্রিমেসি ’ পাস করার মাধ্যমে ইংল্যান্ডের চার্চ ও রাষ্ট্র —উভয়ের ওপর রাজার সার্বভৌমত্ব স্থাপিত হয় এবং পোপের ক্ষমতা খর্ব করা হয়। ----------xx------- বিকল্প প্রশ্ন সমূহ : ‘ অ্যাক্ট অফ সুপ্রিমেসি ’ কী ধরনের আই...

সপ্তম হেনরি কে ছিলেন?

সপ্তম হেনরি কে ছিলেন? সপ্তম হেনরি কে ছিলেন? সপ্তম হেনরি ছিলেন ইংল্যান্ডের টিউডর বংশের প্রথম রাজা, যার প্রকৃত নাম ছিল হেনরি টিউডর। ১৪৮৫ থেকে ১৫০৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি ইংল্যান্ডের রাজা ছিলেন। দীর্ঘ ৩০ বছরের যুদ্ধে, যা ইংল্যান্ডের ইতিহাসের ‘ গোলাপের যুদ্ধ’ নামে খ্যাত, ইয়র্ক বংশীয় রাজা তৃতীয় রিচার্ডকে পরাজিত করে ১৪৮৫ সালে ইংল্যান্ডের সিংহাসনে বসেন। শুরু হয় ইংল্যান্ডে নতুন রাজতন্ত্রের যুগ। এই নতুন রাজতন্ত্র ‘ নিয়মতান্ত্রিক রাজতন্ত্র ’ বা ‘ নব্য রাজতন্ত্র ’ নামে পরিচিত। প্রকৃতপক্ষে তাঁর হাত ধরেই ইংল্যান্ডে নিয়মতান্ত্রিক রাজতন্ত্রের পথ চলা শুরু হয়। এইসময় তিনি কয়েকটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। ইংল্যান্ডের শাসন ব্যবস্থায় ব্যারন ও সামন্ত প্রভুদের ক্ষমতা হ্রাস , পার্লামেন্টের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, ইংল্যান্ডের যুক্তিবাদ মাথা তুলে দাঁড়ায়।  তারই সূত্র ধরে শুরু হয় ধর্ম সংস্কার আন্দোলন । জন্ম নেয় প্রোটেস্ট্যান্ট ধর্মীয় মতবাদ। শাসন ব্যবস্থায় মধ্যবিত্ত শ্রেণীর ক্ষমতা ও মর্যাদা বৃদ্ধি পায়,   বিচার বিভাগের মর্যাদা বৃদ্ধি পায় এবং বিচার ব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষ...

সিসেরো কে ছিলেন?

 সিসেরো কে ছিলেন? সিসেরো কে ছিলেন? সিসেরোর পুরো নাম মার্কাস টিউলিয়াস সিসেরো । জন্ম ১০৬ খৃষ্টপূর্বাব্দে ইতালির আর্পিনো শহরে। তিনি ছিলেন একাধারে প্রাচীন রোমের একজন প্রখ্যাত রাষ্ট্রচিন্তাবিদ, রাজনীতিবিদ, আইনজ্ঞ, শ্রেষ্ঠ গদ্য শিল্পী ও সুবক্তা। খ্রিস্টপূর্ব ৭৯ সালে তিনি এথেন্সে আসেন এবং হেরোডেটাস , থুকিডিটিস , প্লেটো ও অ্যারিস্টটলের ইতিহাস ও দর্শনের চর্চা শুরু করেন এবং মুগ্ধ হন। তাঁদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে লেখেন দুটি বিখ্যাত গ্রন্থ — দ্য রিপাবলিক (The Republic) এবং দা লস (The Laws)। সিসেরোর এই দুটো গ্রন্থ থেকে আমরা জানতে পারি তাঁর রাষ্ট্রচিন্তার বৈশিষ্ট্য ও ধারা সম্পর্কে। জানতে পারি,  ১) রাষ্ট্র একটি নৈতিক ও যৌথ সংস্থা এবং প্রত্যেক নাগরিকের সদস্য, ২) রাষ্ট্রের লক্ষ্য হলো নাগরিকদের সুশাসন এবং নিরাপত্তা প্রদান করা, ৩) নাগরিকদের ঐক্যবোধ দায়বদ্ধতা এবং অধিকারের ওপর রাষ্ট্রের স্থায়িত্ব নির্ভর করে, ৪) প্রাকৃতিক আইনের উপর নির্ভর করে রাষ্ট্রীয় আইন তৈরি ও পরিচালনা করলে রাষ্ট্রে অরাজগতা থাকে না।  প্রকৃতপক্ষে, সিসেরো রাষ্ট্রচিন্তার জগতে এক নব দিগন্তের উন্মোচন ঘটিয়েছিলেন। ঐ...

জিয়াউদ্দিন বারনি কে ছিলেন?

জিয়াউদ্দিন বারনি কে ছিলেন? জিয়াউদ্দিন বারনি কে ছিলেন? জিয়াউদ্দিন বারনি ছিলেন সুলতানি যুগের একজন সর্বশ্রেষ্ঠ ঐতিহাসিক ও রাষ্ট্রচিন্তাবিদ। তুর্কিস্তানের এক অভিজাত পরিবারে তাঁর জন্ম হয় ১২৮৫ খ্রিস্টাব্দে। এই পরিবার তিন প্রজন্ম ধরে সুলতানি শাসকদের অধীনে কর্মরত ছিলেন। জিয়াউদ্দিন বারানি নিজে মোহাম্মদ বিন তুঘলক ও ফিরোজ শাহ তুঘলকের সভাসদ ও নাদিম হিসেবে পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তবে তিনি সবচেয়ে খ্যাতি অর্জন করেছেন সুলতানি যুগের একজন প্রখ্যাত ঐতিহাসিক ও রাষ্ট্রচিন্তাবিদ হিসাবে। তার লেখা, ‘ তারিখ-ই ফিরোজশাহী’ এবং ‘ ফতোয়া ই জাহান্দারি’ গ্রন্থ দুটি তৎকালীন ভারতের ইতিহাস রচনায় গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই গন্ধ দুটি থেকে সুলতানি আমলের রাজনৈতিক ঘটনা ও শাসননীতির বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া যায়। তারিখ ই ফিরোজশাহী গ্রন্থে বরণী সুলতানদের নীতি ও চরিত্রের বিচার করেছেন। এবং ফাতওয়া ই জাহান্দারী গ্রন্থে রাষ্ট্রনীতি এবং সুলতানি রাষ্ট্রের প্রকৃতি সম্পর্কে তার অভিমত ব্যক্ত করেছেন। তার এই বিবরণ অনুযায়ী সুলতানি যুগের রাষ্ট্র ব্যবস্থার প্রকৃতি ছিল জাহান্দারী অর্থাৎ ধর্মনিরপেক্ষ। ---------xx--------

ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য

ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্যগুলো লেখো। ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্র কী? ধর্মাশ্রয়ী বা পুরোহিততান্ত্রিক রাষ্ট্রের ইংরেজি প্রতিশব্দ হল ‘ থিওক্র্যাটিক স্টেট ’। ‘ থিওক্র্যাটিক ’ শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ ‘ থিওস’  থেকে, যার অর্থ দেবতা। এদিক থেকে বিচার করলে,  দেবতা বা ঈশ্বর  কর্তৃক পরিচালিত রাষ্ট্রই হল ধর্মশ্রয়ী রাষ্ট্র। তবে, এই ধরনের রাষ্ট্রে স্বয়ং ঈশ্বর নয়,  ঈশ্বরের প্রতিনিধি হিসেবে একজন ধর্মগুরু বা পুরোহিত ঈশ্বরের নামে দেশের শাসন পরিচালনা করেন। ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য : শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থের দিক থেকে বিচার করলে ধর্মশ্রয়ী রাষ্ট্রের কয়েকটি চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্রে অদৃশ্য ঈশ্বরই হলেন সর্বশক্তির উৎস অর্থাৎ সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী। ঈশ্বরের নির্দেশ অর্থাৎ ধর্মগ্রন্থের বিধি-বিধানই রাষ্ট্রের আইন। ঈশ্বর স্বয়ং নয়, ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্রে ঈশ্বরের প্রতিনিধি হিসেবে ধর্মগুরু বা যাজক কিংবা পুরোহিত রাষ্ট্রের শাসন ক্ষমতা পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন।  এবং ঈশ্বরের আইন কার্যকরী করেন। সর্বোপরি ধর্মশ্রয়ী রাষ্ট্র...

ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্র’ বলতে কী বোঝায়?

‘ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্র’ বলতে কী বোঝায়?  ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য : ‘ধর্মশ্রয়ী রাষ্ট্র’ বলতে কী বোঝায়? ধর্মকে আশ্রয় করে যে রাষ্ট্র-ব্যবস্থা পরিচালিত হয়, এক কথায় তাকেই ‘ধর্মশ্রয়ী রাষ্ট্র’ বলা হয়। তবে শব্দের বুৎপত্তিগত অর্থের দিক থেকে বিচার করলে ধর্মশ্রয়ী রাষ্ট্রের প্রকৃত চরিত্র উপলব্ধি করা যায়। ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্রের সংজ্ঞা : ধর্মাশ্রয়ী বা পুরোহিততান্ত্রিক রাষ্ট্রের ইংরেজি প্রতিশব্দ হল ‘ থিওক্র্যাটিক স্টেট ’। ‘ থিওক্র্যাটিক ’ শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ ‘ থিওস’  থেকে, যার অর্থ দেবতা।  এদিক থেকে বিচার করলে, দেবতা বা ঈশ্বর কর্তৃক পরিচালিত রাষ্ট্রই হল ধর্মশ্রয়ী রাষ্ট্র। তবে, লক্ষণীয় বিষয় হল, এই ধরনের রাষ্ট্রে স্বয়ং ঈশ্বর নয়,  ঈশ্বরের প্রতিনিধি হিসেবে একজন ধর্মগুরু বা পুরোহিত ঈশ্বরের নামে দেশের শাসন পরিচালনা করেন। অর্থাৎ ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্রে ধর্ম ও রাজনীতির মধ্যে গভীর সম্পর্ক থাকে। শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থের দিক থেকে বিচার করলে ধর্মশ্রয়ী রাষ্ট্রের কয়েকটি চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্রে অদৃশ্য ঈশ্বরই হলেন সর্বশক্তির উৎস অর্থাৎ সার্...

কাকে কেন 'ভারতের মেকিয়াভেলি' বলা হয় কেন?

কৌটিল্যকে ভারতের মেকিয়াভেলি বলা হয় কেন? কাকে কেন 'ভারতের মেকিয়াভেলি' বলা হয় কেন? প্রাচীন ভারতের একজন বিখ্যাত রাষ্ট্রচিন্তাবিদ হলেন কৌটিল্য। তিনি ‘চাণক্য’ নামেও খ্যাতি লাভ করেছেন। কোন কোন গবেষক তাঁকে বিষ্ণু গুপ্ত বলেও উল্লেখ করেছেন। তিনি ছিলেন মৌর্য সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠাতা চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের প্রধান পরামর্শদাতা এবং পরবর্তীকালে তাঁর প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কূটনৈতিক জ্ঞান এবং রাজনৈতিক দূরদর্শিতা নন্দ বংশের উচ্ছেদ ঘটিয়ে মৌর্য বংশের প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। বিভিন্ন কারণে তিনি প্রাচীন ভারতের ম্যাকিয়াভেলি নামে খ্যাতি লাভ করে আছেন। প্রথমত তিনি ছিলেন প্রাচীন  ভারতের প্রথম বরেণ্য রাষ্ট্রচিন্তাবিদ । ‘অর্থশাস্ত্র’ লেখার মাধ্যমে তিনি এই খ্যাতি অর্জন করেছেন। এই গ্রন্থে তিনি একজন  রাজার অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক নীতি  কিভাবে পরিচালিত হওয়া উচিত সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় উপদেশ প্রদান করেছেন যা তৎকালীন ভারতে বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়েছিল।  রাষ্ট্রচিন্তাবিদ ছাড়াও তিনি একজন তীক্ষ্ণ বুদ্ধিসম্পন্ন  কূটনীতিবিদ ও শাস্ত্রজ্ঞ পন্ডিত  হিসেবে খ্যাতি লাভ করেছিলেন।  আধুনিক রাষ্...

কৌটিল্য কে ছিলেন?

কৌটিল্য কে ছিলেন? কৌটিল্য কে ছিলেন? কৌটিল্য ছিলেন প্রাচীন ভারতের একজন বিখ্যাত কূটনীতিক ব্রাহ্মণ। তিনি ‘চাণক্য’ নামেও খ্যাতি লাভ করেছেন। তাঁর প্রকৃত নাম বিষ্ণু গুপ্ত বলেও কোন কোন গবেষক উল্লেখ করেছেন। কৌটিল্য ছিলেন মৌর্য সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠাতা চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের প্রধান পরামর্শদাতা এবং পরবর্তীকালে তাঁর প্রধানমন্ত্রী। বিভিন্ন কারণে তিনি প্রাচীন ভারতের ইতিহাসে খ্যাতি লাভ করে আছেন।  প্রথমত তিনি ছিলেন প্রাচীন ভারতের প্রথম বরেণ্য রাষ্ট্রচিন্তাবিদ । ‘অর্থশাস্ত্র’ লেখার মাধ্যমে তিনি এই খ্যাতি অর্জন করেছেন। অর্থশাস্ত্রের মূল বিষয় রাষ্ট্রনীতি হলেও এখানে তিনি তৎকালীন সময়ের (মৌর্য যুগের) সমাজ, অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ব্যাখ্যা করেছেন।  এই গ্রন্থে তিনি একজন রাজার অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক নীতি কিভাবে পরিচালিত হওয়া উচিত সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় উপদেশ প্রদান করেছেন যা তৎকালীন ভারতে বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়েছিল।  রাষ্ট্রচিন্তা বিদ ছাড়াও তিনি একজন তীক্ষ্ণ বুদ্ধিসম্পন্ন কূটনীতিবিদ ও শাস্ত্রজ্ঞ পন্ডিত হিসেবে খ্যাতি লাভ করেছিলেন।  আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তাবিদ ম্যাকিয়াভেলির মতো তিনিও রাজাকে রাষ্ট্রের প...