স্পার্টার স্বাধীন নাগরিকদের ( স্প্যার্টিয়েট ) সঙ্গে হেলট ও পেরিওকয়দের সম্পর্ক
প্রাচীন গ্রিসের নগররাষ্ট্র স্পার্টার স্বাধীন নাগরিকদের ( স্প্যার্টিয়েট ) সঙ্গে হেলট ও পেরিওকয়দের সম্পর্ক কেমন ছিল?
- স্পার্টার স্বাধীন নাগরিক ও ক্রীতদাস :
প্রাচীন গ্রিসের একটি গুরুত্বপুর্ণ পলিস হল স্পার্টা। স্পার্টার সমাজ কাঠামোয় তিন শ্রেণির মানুষ বসবাস করত। এরা হল - স্প্যার্টিয়েট, হেলট বা কৃতদাস এবং পেরিওকয় বা অর্ধ-স্বাধীন নাগরিক।
**
১) স্পার্টার স্বাধীন নাগরিক :
স্পার্টার স্বাধীন নাগরিক বলা হত স্প্যার্টিয়েট। এরা প্রচুর জমিজমার মালিক হত এবং এদের একমাত্র পেশা ছিল সৈনিক হিসাবে কাজ করা।
২) অর্ধ-স্বাধীন নাগরিক :
স্পার্টার অর্ধ-স্বাধীন প্রজাদের বলা হত পেরিওকয়। এরা শাসকগোষ্ঠীর রাজকীয় জমিজমা চাষ, শিল্পোৎপাদন ও বাণিজ্যের কাজে নিয়োজিত হত।
৩) স্পার্টার ক্রীতদাস :
এবং হেলট হল স্পার্টার ক্রীতদাস শ্রেণি। এরা সমাজের সবচেয়ে নির্যাতিত ও শোষিত শ্রেণি। ঐতিহাসিক অ্যানড্রুজ বলেছেন, স্পার্টার হেলটরা ছিল পুরোপুরি ক্রীতদাস।
- স্পার্টার স্বাধীন নাগরিক ও ক্রীতদাসদের সম্পর্ক :
স্পার্টার স্বাধীন নাগরিক বা স্প্যার্টিয়েটদের সঙ্গে হেলট বা ক্রীতদাসদের সম্পর্ক মোটেই ভালো ছিল না।
- দাস ও দাস-মালিকের সম্পর্ক : স্পার্টার সমাজব্যবস্থায় স্বাধীন নাগরিক ও হেলটদের সম্পর্ক ছিল দাস ও দাস-প্রভুর। প্রভুর নিয়ন্ত্রণেই হেলটদের জীবন কাটত। তাই স্প্যার্টিয়েটরা চাইলেই হেলটদের অন্য প্রভুর কাছে বিক্রি করে দিত পারত।
- সম্পদ ও সম্পদের মালিক : হেলটদের রাষ্ট্রীয় সম্পদ হিসাবে গণ্য করা হত। আর এই সম্পদের ব্যবহারিক মালিক বা প্রভু ছিল স্পার্টার স্বাধীন নাগরিক বা স্প্যার্টিয়েটরা।
- অত্যাচারিত ও অত্যাচারকারীর সম্পর্ক : হেলটদের পদানত করে রাখার জন্য স্পার্টান বা স্বাধীন নাগরিকরা মাঝে মাঝেই গোপনে হেলটদের নির্বিচারে হত্যা করত।
- সেনাবাহিনীতে বৈষম্য : স্বাধীন নাগরিকরা সেনাবাহিনীতে স্বাধীনভাবে থাকতে পারত। কিন্তু হেলটদের সবসময় নিরস্ত্র ও নজরবন্দী থাকতে হত।
- বিচার বিভাগের বৈষম্য নির্যাতন : স্বাধীন নাগরিকের একটি অংশ, যারা ম্যাজিস্ট্রেট হিসাবে দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত ছিল, তারা হেলটদের বিরুদ্ধে বাৎসরিক যুদ্ধের মধ্যমে নির্মমভাবে হত্যা করত।
- মার্শাল ল-এর শিকার : সীমাহীন নির্যাতনের স্বীকার হয়ে হেলট বা কৃতদাসরা বিদ্রোহ করলে বা করার চেষ্টা করলে ইফর নামে উচ্চপদস্থ কর্মচারীরা (স্বাধীন নাগরিক) মার্শাল ল জারি করে তাদের বিনাশ করত।
সুতরাং আর্থিক দিক থেকে শ্রেণি বিভক্ত সমাজে স্বাধীন নাগরিকদের (স্প্যার্টিয়েট) সঙ্গে হেলট বা কৃতদাসদের সম্পর্ক খুবই খারাপ ছিল। এই সম্পর্কের কারণেই হেলটরা মাঝে মাঝে বিদ্রোহ ঘোষণা করত। ৪৬৪ খ্রীষ্টপূর্বাদে এই ধরণের একটি বড় বিদ্রোহের কারণেই স্পার্টার পতন অনিবার্য হয়ে ওঠে। তবে পেরিওকয়রা কিছু সুযোগ সুবিধা পেত বলে এরা কোনদিন বিদ্রোহের পথে হাঁটেনি।
----------- সমাপ্ত ----------
ক) প্রাচীন গ্রিসের নগররাষ্ট্র স্পার্টার সমাজ ব্যবস্থার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।
স্বাধীন নাগরিকদের সঙ্গে অর্ধ-স্বাধীন নাগরিকদের সম্পর্ক মোটামুটি ভালো ছিল। কারণ, স্বাধীন নাগরিকদের কাছ থেকে পেরিওকয়রা কিছু সামাজিক ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ও সহানুভূতি লাভ করত বলে জানা যায়।
তবে বৈষম্যও কম ছিল না। যেমন,
এই প্রশ্নের উত্তরের জন্য -
- প্রথম মেইন পয়েন্ট-এর পরিবর্তন কর। "স্পার্টার স্বাধীন নাগরিক ও ক্রীতদাস" এর পরিবর্তে লেখো "স্পার্টার সমাজ ব্যবস্থা"।
- ** এই চিহ্নের জায়গায় একটি সাব পয়েন্ট যোগ করো। পয়েন্টটা হল ঃ স্পার্টান সমাজে শ্রেণি বিভাগ"
- শেষ অনুচ্ছেদ এর আগে নিচের অংশটুকু যোগ করো -
- স্বাধীন নাগরিকদের সঙ্গে পেরিওকয়দের সম্পর্ক :
স্বাধীন নাগরিকদের সঙ্গে অর্ধ-স্বাধীন নাগরিকদের সম্পর্ক মোটামুটি ভালো ছিল। কারণ, স্বাধীন নাগরিকদের কাছ থেকে পেরিওকয়রা কিছু সামাজিক ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ও সহানুভূতি লাভ করত বলে জানা যায়।তবে বৈষম্যও কম ছিল না। যেমন,
- পেরিকয়দের জমিগুলো ছিল স্বাধীন নাগরিকদের চেয়ে কম উর্বর।
- নানা ধরণের করের বোঝা বইতে হত।
- রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত থাকত।
- সামাজিক মেলামেশা থাকলেও বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপনে নিষেধাজ্ঞা ছিল।
- এথেন্সের মেটিকদের মত স্পার্টার পেরিওকয়রা স্বাধীন নাগরিক শ্রেণিতে উন্নিত হতে পারত না।
------xx-------
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন