সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ধর্মসংস্কার আন্দোলনের ফলাফল

ধর্মসংস্কার আন্দোলনের ফলাফল কী হয়েছিল?

Results of the Reformation Movement,ধর্মসংস্কার আন্দোলনের ফলাফল, ইউরোপে ধর্মসংস্কার আন্দোলনের ফলাফল,ধর্ম সংস্কার আন্দোলনের প্রভাব
ধর্মসংস্কার আন্দোলনের ফলাফল

ধর্ম সংস্কার আন্দোলনের প্রভাব

ধর্মসংস্কার আন্দোলন ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এক ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। এই আন্দোলনের ফলাফল হয়েছিল সুদূরপ্রসারী।  ইউরোপের ধর্মীয়, সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতি ইত্যাদি ক্ষেত্রে ধর্মসংস্কার আন্দোলনের গভীর প্রভাব পড়েছিল।

ধর্মসংস্কার আন্দোলনের ধর্মীয় প্রভাব :

  1. খ্রিস্টান জগতের বিভাজন :  ধর্মসংস্কার আন্দোলনের ফলে খ্রিস্টান ধর্মের ঐক্য বিনষ্ট হয় এবং প্রোটেস্ট্যান্ট ও ক্যাথলিক নামে দুটি পৃথক ধর্ম সম্প্রদায়ের সৃষ্টি হয়।
  2. পোপের প্রাধান্য নষ্ট হয় : এই আন্দোলনের ফলে ইউরোপ তথা বিশ্বে ক্যাথলিক চার্চ ও পোপতন্ত্রের একক প্রাধান্য নষ্ট হয়। ফলে, বিশ্বজনীন চার্চ-ব্যবস্থার পতন ঘটে।
  3. প্রতি-ধর্মসংস্কার আন্দোলনের সূচনা : ধর্মসংস্কার আন্দোলনের প্রভাবে প্রটেস্ট্যান্ট ধর্মমতের ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তাকে রুখে দিয়ে ক্যাথলিক ধর্মের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে প্রতি-সংস্কার আন্দোলন শুরু হয়।
  4. বিভিন্ন মতবাদের সৃষ্টি হয় : ধর্মসংস্কার আন্দোলনের ফলে ইউরোপে লুথারবাদ, কেলভিনবাদ, অ্যানাব্যাপটিস্টবাদ, জুইংলির মতবাদ, জেসুইট মতবাদ সহ নানান দার্শনিক মতবাদের উদ্ভব হয়। সেই সঙ্গে পরধর্মসহিষ্ণুতার বাতাবরণ তৈরি হয়।

ধর্মসংস্কার আন্দোলনে রাজনৈতিক প্রভাব :

  1. রাজার ক্ষমতা বৃদ্ধি : ধর্মসংস্কার আন্দোলনের প্রভাবে ইংল্যান্ডে অ্যাক্ট অফ সুপ্রিমেসি, এবং জার্মানিতে অগসবার্গের সন্ধি দ্বারা রাজার ক্ষমতা ও প্রভাব-প্রতিপত্তি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়।
  2. রাজতান্ত্রিক-স্বৈরতন্ত্র বিরোধী আন্দোলনের সূচনা : ধর্মআন্দোলন ক্রমশ রাজনৈতিক আন্দোলনে রূপান্তরিত হয় এবং রাজার স্বৈরতান্ত্রিক ক্ষমতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ আন্দোলনের পথ প্রস্তুত হয়। এই আন্দোলন পরবর্তীকালে উদারনৈতিক পার্লামেন্ট গঠনের সংগ্রামকে উৎসাহিত করেছিল।
  3. ধর্ম ও রাজনীতির পৃথকীকরণ : ধর্মসংস্কার আন্দোলনের ফলে চার্চের ওপর রাজার ক্ষমতা সুপ্রতিষ্ঠিত হয়। ফলে ধর্ম ও রাজনীতি পৃথক হতে শুরু করে।

 ধর্মসংস্কার আন্দোলনের অর্থনৈতিক প্রভাব :

  1. পোপের শোষণ বন্ধ হয় : ধর্ম সংস্কার আন্দোলনের ফলে ধর্ম কর সহ অন্যান্য কর আদায়ের অধিকার পোপ হারিয়ে ফেলে। অন্যদিকে রাষ্ট্র চার্চের সম্পত্তির অধিকার নেয় এবং তা জনগণের উন্নতিতে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত হয়।
  2. শিল্প বাণিজ্যের উন্নতি ঘটে : প্রোটেস্ট্যান্ট ধর্মাবলম্বীরা কৃষি অর্থনীতির পরিবর্তন ঘটিয়ে শিল্প ও বাণিজ্যের অগ্রগতি সাধনে উদ্যোগ গ্রহণ করে। ফলে ইউরোপীয় দেশগুলি আর্থিকভাবে শক্তিশালী হয়ে ওঠে।
  3. পুঁজিবাদের উত্থান হয় : ক্যাথলিক ক্রিস্টান ধর্মে ঋণদান ও সুধ গ্রহণ নিষিদ্ধ ছিল।  ফলে অর্থনীতিতে পুঁজির উদ্ভব হয়নি। কিন্তু  প্রটেস্ট্যান্ট ধর্মীয় মতবাদে এ-বিষয়ে কোনো বিধি-নিষেধ না থাকায় ইউরোপে পুঁজির উদ্ভব ও বিকাশ ঘটতে শুরু কর।

ধর্ম সংস্কার আন্দোলনের সামাজিক প্রভাব :

  1. সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি হয় : ধর্মসংস্কার আন্দোলনের ফলে ইউরোপের সমাজ পরস্পর বিরোধী দু'ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। ক্যাথলিক এবং প্রোটেস্ট্যান্ট পন্থীদের মধ্যে গৃহযুদ্ধ বেঁধে যায়।
  2. প্রচলিত আচার অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ : ধর্ম সংস্কার আন্দোলনের ফলে মে গেম , কক ফাইটিং সহ গণসংস্কৃতির চিরাচরিত অনুষ্ঠানগুলি নিষিদ্ধ ঘোষণা হয়।

ধর্ম সংস্কার আন্দোলনের সাংস্কৃতিক প্রভাব :

  1.  আঞ্চলিক ভাষা ও সাহিত্যের বিকাশ : ধর্মসংস্কার আন্দোলনের পরোক্ষ প্রভাবে ইউরোপে আঞ্চলিক ভাষা ও সাহিত্যের বিকাশ ঘটে। জন ওয়াইক্লিফ ইংরেজি ভাষায় এবং মার্টিন লুথার জার্মান ভাষায় বাইবেল অনুবাদ করেন। সেই সঙ্গে আঞ্চলিক ভাষায় বহু ধর্মীয় ও ধর্মনিরপেক্ষ সাহিত্য রচিত হয়।
  2. যুক্তিবাদ ও মুক্তচিন্তার বিকাশ : এই আন্দোলনের ফলে চার্চের নিয়ন্ত্রণ থেকে মানুষ মুক্তি পায়। অন্ধবিশ্বাস ত্যাগ করে মানুষ যুক্তি তর্কের মাধ্যমে কোন বিষয় গ্রহণ বা অর্জন করার নীতি গ্রহণ করে। এভাবে সমাজে মুক্ত চিন্তার বিকাশ ঘটে।
এইভাবে ধর্মসংস্কার আন্দোলন মধ্যযুগের আর্থসামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক জীবনধারায় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন ঘটায়। অন্ধবিশ্বাস ত্যাগ করে মানুষ নবজাগরণ প্রসূত যুক্তিবাদী মানসিকতার সংস্পর্শে আসে। ফলে ইউরোপে আধুনিক যুগের পটভূমি তৈরি হয়।
--------xx---------

এই উত্তরটি অন্য যেভাবে ঘুরিয়ে আসতে পারে :

  1. ধর্মসংস্কার আন্দোলনের ফলাফল আলোচনা করো। 
  2. ইউরোপে ধর্মসংস্কার আন্দোলনের ফলাফল কী হয়েছিল?
  3. ধর্মসংস্কার আন্দোলনের প্রভাব লেখো।
  4. ইউরোপের ইতিহাসে ধর্ম সংস্কার আন্দোলনের গুরুত্ব বর্ণনা করো।

ধর্ম সংস্কার আন্দোলন সম্পর্কে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন :

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় প্রশ্নগুলো দেখ

নব্য প্রস্তর যুগ ও তার বৈশিষ্ট লেখো।

নব্য প্রস্তর যুগের সময়কাল উল্লেখ করো। এই সময়ের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট লেখো। নব্য প্রস্তর যুগ : প্রাগৈতিহাসিক যুগের শেষ পর্বকে বলা হয় নব্য প্রস্তর যুগ বা Neolithic Age । এই পর্বে আদিম মানুষ খাদ্য সংগ্রাহক থেকে ক্রমশঃ  খাদ্য উৎপাদক শ্রেণিতে রূপান্তরিত হয়। আনুমানিক ৮০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে 4000 খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত সময়কালকে নব্য প্রস্তর যুগ বলা হয়। নব্য প্রস্তর যুগের বৈশিষ্ট্য : ১) এই যুগের মানুষ খাদ্য উৎপাদন শুরু করে। অর্থাৎ কৃষি কাজের সূচনা হয়। ২) পশু শিকারের সাথে সাথে পশুপালনের সূচনা হয়। ৩) হাতিয়ার গুলি খুবই সূচালো, ধারালো ও ক্ষুদ্র আকারের হয়। ৪) চাকার ব্যবহার শুরু হয় ৫) প্রথম আগুন জ্বালানোর কৌশল আবিষ্কার করে  ৬) যাযাবর জীবন ছেড়ে স্থায়ী বসতি গড়ে উঠতে থাকে। এই ধরণের আরও প্রশ্ন ও উত্তর  পেতে  এখানে ক্লিক করো ।

জনপদ কী? প্রাচীন ভারতে জনপদ গড়ে ওঠার কারণ ব্যাখ্যা করো।

জনপদ কী? কীভাবে প্রাচীন ভারতে জনপদের উৎপত্তি হয়? জনপদ কী : 'জন' শব্দের অর্থ উপজাতি বা জনগোষ্ঠী। 'পদ' শব্দের অর্থ পা। চার্লস ল্যানম্যান -এর মতে, নির্দিষ্ট কোন জাতিগোষ্ঠী যখন কোন নির্দিষ্ট কোন ভৌগোলিক এলাকায় বসতি গড়ে তোলে তখন সেই ভৌগোলিক এলাকাকে  'জনপদ' বলে। কৌটিল্য জনপদ বলতে  নির্দিষ্ট ভূখণ্ড ও জনসমষ্টিকে বুঝিয়েছেন। এই জনপদে একদিকে থাকবে বিচক্ষণ উচ্চবর্ণের মানুষ বা প্রভু। অন্যদিকে থাকবে - ১) পর্যাপ্ত পরিমাণ উর্বর জমি এবং ২) সেই ভূখন্ডে থাকবে প্রচুর পরিশ্রমী কৃষক যাদের কর প্রদানের চাপ ও শাস্তি সহ্য করার ক্ষমতা থাকবে।  জনপদ গড়ে ওঠার কারণ (পটভূমি) : আর্যদের আগমন : আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০ অব্দে আর্যরা ভারতে প্রবেশ করে। এর ছিল যাযাবর প্রকৃতির । কারণ, পশু খাদ্যের সন্ধানে তারা বসবাসের জায়গা পরিবর্তন করত। তবে তারা গোষ্ঠীবদ্ধ জীবন যাপন করত। তাই এদের 'জন' (জনগোষ্ঠী বা উপজাতি) বলা হত।  জনসংখ্যা বৃদ্ধি : সপ্ত সিন্ধু এলাকায় উর্বর ভূমির কল্যাণে আর্যদের মধ্যে স্থায়ীভাবে বসবাসের প্রবণতা বাড়ে। ফলে নির্দিষ্ট এলাকায় জনসংখ্যা বাড়তে থাকে। ক্রমশ তারা অর্ধ-যাযাবর জীবনে ...

প্রাচীন গ্রিসে নগররাষ্ট্র গড়ে ওঠার কারণ বা পটভূমি বর্ননা করো।

প্রাচীন গ্রিসে নগররাষ্ট্র গড়ে ওঠার কারণ বা পটভূমি Describe-the-reasons-or-background-for-the-development-of-city-states-in-ancient-Greece পলিস শব্দের অর্থ ' নগররাষ্ট্র '। খ্রিষ্টপূর্ব পঞ্চম থেকে ষষ্ঠ শতকে মধ্যবর্তী সময়ে গ্রিসে প্রায় ১৫০০ টি ছোট ছোট রাষ্ট্র বা সিটি স্টেট গড়ে ওঠে। এগুলির যাবতীয় কাজকর্মে নাগরিকরাই প্রত্যক্ষভাবে অংশ গ্ৰহণ করত। এই ছোট রাষ্ট্রগুলো পলিস বা নগর-রাষ্ট্র নামে পরিচিত। যেমন - এথেন্স, স্পার্টা ইত্যাদি। নগররাষ্ট্র গড়ে ওঠার কারণ বা পটভূমি প্রাচীন গ্রিসে নগররাষ্ট্র গড়ে ওঠার পটভূমি বিশ্লেষণ করলেই নগররাষ্ট্র গড়ে ওঠার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ সামনে আসে।  ১) বৈদেশিক আক্রমণ ও  অক্টোপলিস  : আনুমানিক ১০০০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে গ্রীকরা বৈদেশিক আক্রমণের ভয়ে গ্রিসের বিভিন্ন পাহাড়ের শিখরে শক্তিশালী কেন্দ্র গড়ে তোলে। এগুলো 'অক্টোপলিস' নামে পরিচিত। এই অক্টোপলিসকে কেন্দ্র করে ক্রমশ নগর গড়ে ওঠে এবং এই নগরকে কেন্দ্র করে পরবর্তীকালে নগররাষ্ট্র বা পলিস গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়।  ২) স্থানীয় বাজার : আস্তে আস্তে এই  'অক্টোপলিস'গুলোর কাছেই স্থানীয় বাজার গড়ে উঠতে থাকে।...

মধ্যপ্রস্তর যুগ বলতে কোন সময়কালকে বোঝানো হয়? এই যুগের বৈশিষ্ট্য লেখো

'মধ্যপ্রস্তর যুগ' ও তার বৈশিষ্ট্য প্লেইস্টোসিন যুগের শেষ পর্ব ( ১৫ হাজার বছর আগে ) থেকে হোলোসিন যুগের সূচনা পর্ব ( ১০ হাজার বছর ) পর্যন্ত সময়কালকে মধ্যপ্রস্তর যুগ বলে। অন্যভাবে বলা বলা যায়, খাদ্য সংগ্রহকারী প্রাচীন প্রস্তর যুগ এবং খাদ্য উৎপাদনকারী নব্য প্রস্তর যুগের মধ্যবর্তী সময়কালকে 'মধ্য প্রস্তর যুগ' বলা হয়। মধ্য প্রস্তর যুগের বৈশিষ্ট্য ঃ ১) সময়কাল : মধ্য প্রস্তর যুগ খ্রিষ্টপুর্ব ১৫ হাজার বছর থেকে ১০ হাজার বছর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। ২) হাতিয়ার :  এই যুগের ( মধ্য প্রস্তর যুগ ) হাতিয়ারগুলি প্রাচীন প্রস্তর যুগের চেয়ে উন্নত ও আকারে ছোটো ছিল। পাথর ছাড়া জীবজন্তুর হাড়, দাঁত ইত্যাদিও হাতিয়ার তৈরিতে ব্যবহার করা হত। ৩) জীবিকা ও জীবনযাপন : মধ্য প্রস্তর যুগের মানুষের প্রধান জীবিকা ছিল পশু শিকার ও ফলমূল সংগ্রহ। এবং জীবনযাত্রা ছিল অর্ধ যাযাবর প্রকৃতির। ৪) কৃষিকাজ : যুগের শেষ পর্বে মানুষ কৃষিকাজের সূচনা করে। ৫) পোষাক :  মধ্য প্রস্তর যুগের মানুষ প্রাচীন প্রস্তর যুগের মত গাছের ছাল ও পশুর চামড়া দিয়ে পোশাক বানাত। তবে এই পোশাক আগের চেয়ে উন্নতমানের ছিল। ৬) যানবাহন : এই ...

প্রাচীন প্রস্তর যুগ, মধ্য প্রস্তর যুগ ও নব্য প্রস্তর যুগের মধ্যে পার্থক্য দেখাও।

প্রাচীন, মধ্য ও নব্য প্রস্তর যুগের মধ্যে পার্থক্য বাংলা 👉 English অথবা,  প্রাচীন প্রস্তর যুগ, মধ্য প্রস্তর যুগ ও নব্য প্রস্তর যুগের মধ্যে তুলনা করো।

প্রাক-ঐতিহাসিক (প্রাগৈতিহাসিক) যুগ কাকে বলে ?

  প্রাক-ঐতিহাসিক যুগ মানব সভ্যতার সূচনা হয় আজ থেকে ৩৬ লক্ষ্য বছর আগে। এই সময় থেকে লিপির ব্যবহার শুরু হওয়ার মধ্যবর্তী সময়কালকে প্রাগৈতিহাসিক যুগ বলা হয়। এই সময়ের ইতিহাস রচনার কোন লিখিত উপাদান পাওয়া যায় না। ফলে শুধুমাত্র প্রত্নতাত্বিক উপাদানের ওপর ভিত্তি করেই ইতিহাস লেখা হয়। তবে সব দেশে একই সময়ে প্রাগৈতিহাসিক যুগের সূচনা হয়নি।  -----🙏---- বিকল্প প্রশ্ন : ১) প্রাগৈতিহাসিক যুগ বলতে কী বোঝো? আরও পড়ো : ১)   প্রাগৈতিহাসিক যুগের বৈশিষ্ট্য কী ছিলো ?                     ২) প্রাগৈতিহাসিক যুগকে কয়ভাগে ভাগ করা হয় ও কী কী ? এই ধরণের আরও প্রশ্ন ও উত্তর  পেতে  এখানে ক্লিক করো ।

মহাজনপদ কী? মহাজনপদের বৈশিষ্ট্য সংক্ষেপে লেখো।

মহাজনপদ কী? মহাজনপদের বৈশিষ্ট্য সংক্ষেপে লেখো। মহাজনপদ ও মহাজনপদের বৈশিষ্ট্য  What is Mahajanapada? Briefly write the characteristics of Mahajanapada. মহাজনপদ কী : 'মহা' অর্থ বৃহৎ। 'জনপদ' কথার অর্থ 'নির্দিষ্ট ভূখণ্ডসহ জনসমষ্টি। অর্থাৎ  ক্ষুদ্র রাজ্য। খ্রীষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকের আগে ভারতে উপজাতি গোষ্ঠীভিত্তিক ছোট ছোট জনপদ গড়ে উঠেছিল। এই জনপদ গুলি পরস্পরের ভূখণ্ড দখল করার তাগিদে নিজেদের মধ্যে সব সময় সংঘর্ষে লিপ্ত থাকতো। এই সংঘর্ষে জয় পরাজয়ের সূত্র ধরেই উত্তর ভারতে একাধিক জনপদ সংযুক্ত হয়ে যেত। ফলে বৃহৎ জনপদ বা রাজ্যের জন্ম হয়। এই ধরনের বৃহৎ জনপদ বা রাজ্যগুলি ' মহাজনপদ' নামে পরিচিত হয়। খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীর তিনটি উল্লেখযোগ্য মহাজনপদের নাম হলো মগধ (রাজতান্ত্রিক), বৃজি ও মল্ল (প্রজাতান্ত্রিক)। মহাজনপদের বৈশিষ্ট্য : এই মহাজনপদগুলির ভৌগোলিক অবস্থান ও রাজনৈতিক চরিত্র বিশ্লেষণ করলে কয়েকটি বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়।           ১) উত্তর ভারত কেন্দ্রিক অবস্থান :   ডক্টর হেমচন্দ্র রায়চৌধুরী মতে, মহাজনপদ গুলির অধিকাংশের অবস্থ...

প্রাচীন ভারতে নারীর সামাজিক অবস্থান

 প্রাচীন ভারতে নারীর সামাজিক অবস্থানের ওপর একটি প্রবন্ধ রচনা করো। সমাজে নারীর অবস্থান : প্রাচীনকালে গ্রীস ও রোমের মত ভারতীয় নারীরাও সমাজে বিশিষ্ট স্থান অধিকার লাভ করেছিল। তবে তা মূলত উচ্চশ্রেণির মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল।  ঋগবৈদিক যুগে নারীর অবস্থান :  নারীর গুরুত্ব : পুত্র সন্তান কাম্য হলেও নারীরা মেটেও অবহেলিত ছিল না।  নারী শিক্ষা : নারীরা যথেষ্ট শিক্ষার সুযোগ লাভ করেছিল। এ যুগের উল্লেখযোগ্য বিদুষী নারী ছিলেন - লোপমুদ্রা, ঘোষা, অপলা মমতা প্রমুখ। বেদ পাঠের অধিকার : এই সময় নারীদের বেদ পাঠের অধিকার ছিল বলেও জানা যায়। এমনকী বেদের স্তোত্র রচনায় অংশ নিয়েছিল বলে জানা যায়।  পরবর্তী বৈদিক যুগে নারীর অবস্থান : নারীর গুরুত্ব হ্রাস : এই সময় নারী বেদ পাঠের অধিকার হারায়।  নারী শিক্ষা উপেক্ষিত : তৈত্তিরীয় সংহিতায় নারী শিক্ষার প্রয়োজন নেই বলে জানান হয়। ফলে নারী শিক্ষা ব্যাহত হয়। তা সত্ত্বেও এ সময় কোন কোন নারী উচ্চশিক্ষায় কৃতিত্ব অর্জন করেন। যেমন, গার্গী, মৈত্রেয়ী প্রমুখ।  প্রতিবাদী আন্দোলনের যুগে নারীর অবস্থান : নারী শিক্ষা : বৌদ্ধ গ্রন্থ বিনয়পিটক থেকে জানা...

প্রাচীন প্রস্তর বলতে কী বোঝ? প্রাচীন প্রস্তর যুগের সময়কাল উল্লেখ করো। এই যুগের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।

প্রাচীন প্রস্তর যুগ বলতে কী বোঝ? প্লেইস্টোসিন যুগের শেষ ভাগে (৫০ হাজার - ১৫ হাজার আগে) পৃথিবীতে প্রায়-মানুষেরা ( হোমো ইরেক্টাস)  পাথরকে আকারগত পরিবর্তন না করেই হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করত। তাই তাদের হাতিয়ারগুলি হত অমসৃণ ও বৃত্তাকার। এই ধরণের অস্ত্র ব্যবহারকারী মানুষের সময়কালকে (যুগকে) 'প্রাচীন প্রস্তর যুগ' বলা হয়। প্রাচীন প্রস্তর যুগের সময়কাল : প্রাচীন প্রস্তর যুগের শুরু হয় ৫০ হাজার বছর আগে এবং শেষ হয় প্রায় ১৫ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দে প্রাচীন প্রস্তর  যুগের বৈশিষ্ট্য ঃ প্রাচীন প্রস্তর যুগের শুরু হয় ৫০ হাজার বছর আগে এবং শেষ হয় প্রায় ১৫ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দে এই যুগের মানুষ বিভিন্ন ধরণের পাথর ও হাড়ের তৈরি হাতিয়ার ব্যবহার করত। এই পর্বের মানুষ পাথরকে আকারগত পরিবর্তন না করেই হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করত। তাই তাদের হাতিয়ারগুলি হত অমসৃণ ও বৃত্তাকার। এই যুগের শেষ দিকে মানুষ তীরধনুক আবিষ্কার করে। এই পর্বের মানুষ জীবিকা নির্বাহ করত পশু শিকার, ফলমূল সংগ্রহ এবং মাছ ধরে। এই সময় মানুষ আগুনের ব্যবহার জানত না। তাই তারা কাঁচা মাংস খেত। মানুষ ছোট ছোট গোষ্ঠীবদ্ধ হয়ে বসবাস করত। অর্থাৎ তাদের ...

প্রাচীন গ্রিসে ক্রীতদাস প্রথা ও তাঁর উৎপত্তি

ক্রীতদাস বলতে কী বোঝ? প্রাচীন গ্রিসে কীভাবে ক্রীতদাস সৃষ্টি হত? ক্রীতদাস : ক্রীতদাস কাদের বলা হবে, এ বিষয়ে সমাজবিজ্ঞানীদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। ডিও ক্রাইসস্টম ক্রীতদাসদের গবাদি পশুর সঙ্গে তুলনা করে বলেছেন, গবাদি পশু যেমন তাঁর প্রভুর সম্পত্তি, ঠিক তেমনি ক্রীতদাস হল একজন প্রভুর ব্যক্তিগত সম্পত্তি, যা তিনি ইচ্ছামত বিক্রয় কিম্বা কোন উৎপাদনের কাজে লাগাতে পারে।  প্রখ্যত গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টটল বলছেন, ক্রীতদাস হল এমন এক সত্তা যার কোন পৃথক বা স্বাধীন অস্তিত্ব নেই। প্রভুর মালিকানাধীনে থাকার ওপরই তার অস্তিত্ব নির্ভর করে এবং এটাই প্রকৃতিরই বিধান। সুতরাং প্রাচীন গ্রিসের সমাজব্যবস্থা অনুযায়ী, ক্রীতদাস হল এক ধরণের মানব সম্পদ, যা প্রকৃতির বিধান অনুযায়ী তার প্রভুর মানিকানাধীন থাকতে বাধ্য এবং প্রভু তার নিজের ইচ্ছামত তাকে ক্রয়, বিক্রয় কিম্বা বিভিন্ন উৎপাদন কর্মে নিয়োগ করতে পারে। ক্রীতদাস প্রথা : প্রাচীন গ্রিসের সমাজ ব্যবস্থায় প্রচলিত এবং আইনি স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ক্রীতদাসদের ক্রয়, বিক্রয় ও প্রভুর নিজস্ব ইচ্ছা অনুযায়ী তাকে উৎপাদন কিম্বা সৃষ্টিশীল কাজে নিয়োগ করার অধিকার সম্বলিত সামাজিক প্রথার নাম ক...