আলাউদ্দিন খলজি কী ধর্মনিরপেক্ষ সুলতান ছিলেন?
আলাউদ্দিন খলজি কী একজন ধর্মনিরপেক্ষ সুলতান ছিলেন? |
আলাউদ্দিন খলজী ছিলেন সুলতানি যুগের খলজি রাজবংশের সবচেয়ে শক্তিশালী শাসক। রাষ্ট্র পরিচালনায় বিশেষ দক্ষতার জন্য তিনি ইতিহাসে খ্যাতি লাভ করে আছেন। ‘তারিখ-ই-ফিরোজশাহী’ গ্রন্থ থেকে জানা যায়, তিনি রাষ্ট্রনীতি ও ধর্মনীতিকে দুটি স্বতন্ত্র বিষয় বলে দৃঢ়ভাবে ঘোষণা করেছিলেন।
ধর্মনিরপেক্ষ শাসকের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হল, ধর্ম ও রাজনীতিকে আলাদা করে দেখা এবং রাজনীতিতে ধর্মীয় অনুশাসনকে প্রয়োজনে উপেক্ষা করা। কোন শাসক কঠোরভাবে ধর্মীয় অনুশাসন দ্বারা রাষ্ট্রনীতি পরিচালনা করলে তাঁকে ধর্মনিরপেক্ষ নয়, ধর্মাশ্রয়ী শাসক বলা হয়।
🔖এ প্রসঙ্গে আরও পড়ো : ধর্মশ্রয়ী রাষ্ট্র ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য
এদিক থেকে বিচার করলে আলাউদ্দিন খলজির শাসন ধর্মাশ্রয়ী ছিল না। কারণ, বেয়ানার কাজী ও বিশিষ্ট কোরআন বিশারদ মুঘিসউদ্দিন একসময় অভিযোগ করেছিলেন সুলতানের কার্যকলাপ শরীয়তের আইন অনুযায়ী সম্পন্ন হচ্ছে না। এই অভিযোগের উত্তরে আলাউদ্দিন খলজী বলেছিলেন,
আমি অন্য কোন আইন জানিনা, রাষ্ট্রের প্রয়োজনে আমি যা প্রণয়ন করি, আমার কাছে সেটাই আইন।
প্রকৃতপক্ষে, তিনি শরীয়তের বিধান উপেক্ষা রাষ্ট্রের কল্যাণকে ও প্রয়োজনকে বেশি গুরুত্ব দিতেন। এবং রাষ্ট্রের কল্যাণের জন্য যা করা জরুরী বলে মনে করতেন, তিনি তাই করতেন। ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র ব্যবস্থা ও শাসকের এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। তাঁর কথায় এই বৈশিষ্ট্যের স্পষ্ট আভাস পাওয়া যায়,
কোনটি শরীয়তের বিধানসম্মত, কোনটি বিধানসম্মত নয়, তা আমি জানিনা। রাষ্ট্রের পক্ষে যা কল্যাণকর বা আপৎকালে যা জরুরী বলে আমার মনে হয়, আমি তাই করি।
সুতরাং আলাউদ্দিন খলজি আধুনিক রাষ্ট্রদর্শনের নিরিখে ধর্মনিরপেক্ষ শাসক ছিলেন কিনা, এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা গেলেও, তিনি যে ধর্মশ্রয়ী শাসক ছিলেন না —এ কথা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। তৎকালীন সময়ের বিচারে, এ কারণেই, জিয়াউদ্দিন বরনি তাঁকে ‘ধর্মনিরপেক্ষ শাসক’ হিসেবে তুলে ধরেছেন।
-----------xx----------
বিকল্প প্রশ্ন সমূহ : (এভাবেও 👇 আসতে পারে)
- আলাউদ্দিন খলজি কে ছিলেন? তাঁর শাসনব্যবস্থা কী ধর্মাশ্রয়ী ছিল?
- সম্রাট আলাউদ্দিনের শাসন ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য কি ছিল?
- আলাউদ্দিন খলজির শাসনব্যবস্থার প্রকৃতি কিরূপ ছিল?
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন