‘ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্র’ বলতে কী বোঝায়?
ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য :
‘ধর্মশ্রয়ী রাষ্ট্র’ বলতে কী বোঝায়? |
ধর্মকে আশ্রয় করে যে রাষ্ট্র-ব্যবস্থা পরিচালিত হয়, এক কথায় তাকেই ‘ধর্মশ্রয়ী রাষ্ট্র’ বলা হয়। তবে শব্দের বুৎপত্তিগত অর্থের দিক থেকে বিচার করলে ধর্মশ্রয়ী রাষ্ট্রের প্রকৃত চরিত্র উপলব্ধি করা যায়।
ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্রের সংজ্ঞা :
ধর্মাশ্রয়ী বা পুরোহিততান্ত্রিক রাষ্ট্রের ইংরেজি প্রতিশব্দ হল ‘থিওক্র্যাটিক স্টেট’। ‘থিওক্র্যাটিক’ শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ ‘থিওস’ থেকে, যার অর্থ দেবতা। এদিক থেকে বিচার করলে, দেবতা বা ঈশ্বর কর্তৃক পরিচালিত রাষ্ট্রই হল ধর্মশ্রয়ী রাষ্ট্র।
তবে, লক্ষণীয় বিষয় হল, এই ধরনের রাষ্ট্রে স্বয়ং ঈশ্বর নয়, ঈশ্বরের প্রতিনিধি হিসেবে একজন ধর্মগুরু বা পুরোহিত ঈশ্বরের নামে দেশের শাসন পরিচালনা করেন। অর্থাৎ ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্রে ধর্ম ও রাজনীতির মধ্যে গভীর সম্পর্ক থাকে।
শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থের দিক থেকে বিচার করলে ধর্মশ্রয়ী রাষ্ট্রের কয়েকটি চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়।
- ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্রে অদৃশ্য ঈশ্বরই হলেন সর্বশক্তির উৎস অর্থাৎ সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী।
- ঈশ্বরের নির্দেশ অর্থাৎ ধর্মগ্রন্থের বিধি-বিধানই রাষ্ট্রের আইন।
- ঈশ্বর স্বয়ং নয়, ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্রে ঈশ্বরের প্রতিনিধি হিসেবে ধর্মগুরু বা যাজক কিংবা পুরোহিত রাষ্ট্রের শাসন ক্ষমতা পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন। এবং ঈশ্বরের আইন কার্যকরী করেন।
- সর্বোপরি ধর্মশ্রয়ী রাষ্ট্রে ধর্ম ও রাজনীতির মধ্যেগভীর সম্পর্কবিদ্যমান থাকে।
সুতরাং ‘ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্র’ হল সেই রাষ্ট্রব্যবস্থা যেখানে শাসন ব্যবস্থা কেবলমাত্র ধর্মীয় বিধি-বিধান এবং ধর্মগুরুদের নির্দেশ ও পরামর্শে পরিচালিত হয়।
---------xx--------
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন