সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ম্যাকিয়াভেলির রাষ্ট্রচিন্তার বৈশিষ্ট্য

ম্যাকিয়াভেলির রাষ্ট্রচিন্তার বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ করো।

Characteristics of Machiavelli's Political Thought,ম্যাকিয়াভেলির রাষ্ট্রচিন্তার বৈশিষ্ট্য
ম্যাকিয়াভেলির রাষ্ট্রচিন্তার বৈশিষ্ট্য
মেকিয়াভেলি হচ্ছেন একজন আদি-আধুনিক (Early Modern) রাষ্ট্রচিন্তাবিদ। জন্ম ইতালির ফ্লোরেন্স শহরে,  ১৪৬৯ সালে। তিনি ছিলেন একাধারে একজন কৃতি নাট্যকার, ঐতিহাসিক ও রাষ্ট্রচিন্তাবিদ। আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তার ভিত্তি প্রতিষ্ঠার কারণে তিনি ‘আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তার জনক’ হিসাবে খ্যাতি লাভ করেছেন।

মেকিয়াভেলির রাষ্ট্রচিন্তার বৈশিষ্ট্য :

নিকোলো মেকিয়াভেলি তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ ‘দ্য প্রিন্স’-এ আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তার কিছু বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করেছেন।

    ১) মানব প্রকৃতি :
‘দা প্রিন্স’ গ্রন্থে ম্যাকিয়াভেলি মানুষকে একটি আত্মকেন্দ্রিক, স্বার্থপর, লোভী, সুবিধাবাদী ও ন্যায়নীতিবোধহীন চরিত্ররূপে বর্ণনা করেছেন। তিনি লিখেছেন, এই কারণে মানুষে মানুষে বিবাদ ও সংঘর্ষ দেখা দেয় এবং রাষ্ট্রে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়।

    ২) ধর্ম ও নীতিবোধ : 
ম্যাকিয়াভেলি ধর্ম ও নীতিবোদের সঙ্গে রাষ্ট্রনীতির পার্থক্য সুস্পষ্ট করেছেন।  তাঁর মতে শাসক তাঁর ব্যক্তিগত ধর্মবিশ্বাস ও নীতিবোধের উর্ধ্বে উঠে কঠোরভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করবেন।

    ৩) রাষ্ট্রক্ষমতার তত্ত্ব :
মেকিয়াভেলি সর্বপ্রথম রাষ্ট্রের সার্বভৌম ক্ষমতার তত্ত্ব প্রচার করেন।  তাঁর মতে, একমাত্র রাষ্ট্রই সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী এবং মানুষের ব্যক্তিগত সম্পত্তি সংরক্ষণ এবং জীবনের নিরাপত্তা বিধানই তার প্রধান কাজ। মূলত এই উদ্দেশ্যেই রাষ্ট্রের উৎপত্তি।

    ৪) রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য :
মেকিয়াভেলি তাঁর গ্রন্থে রাষ্ট্রের কিছু বৈশিষ্ট্যের উল্লেখ করেছেন। এগুলি হল — 
  1. ধর্মনিরপেক্ষ নীতি অনুসরণ করা, 
  2. মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা বিধান করা, 
  3. নিরন্তর ক্ষমতা বৃদ্ধির চেষ্টা চালানো,
  4. সরকারের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করা এবং 
  5. প্রশাসনে জনগণের অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করা।
    ৫) রাষ্ট্রের স্বরূপ : ‘দ্য প্রিন্স’ গ্রন্থে মেকিয়াভেলি রাষ্ট্র ও সরকারকে মূলত তিন ভাগে ভাগ করেছেন।  রাজতন্ত্র, অভিজাতন্ত্র ও নিয়মতান্ত্রিক গণতন্ত্র।

    ৬) রাজতন্ত্রের স্বরূপ : মেকিয়াভেলি রাজতন্ত্রকে একটি সাহসী, দৃঢ় ও শৌর্যবীর্য সম্পন্ন বীরত্বের প্রতীক হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। এখানে রাজা হচ্ছেন এমন একজন ব্যক্তিত্ব, যিনি 
  1. দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ, 
  2. শক্তিশালী প্রতিরক্ষা বাহিনী গঠন, 
  3. বিরোধী শক্তিকে কঠোর হাতে দমন এবং 
  4. নিজেকে জনগণের কাছে জনপ্রিয় করে তোলার চেষ্টা করবেন। সেই সঙ্গে 
  5. তিনি নিজে একজন দক্ষ যোদ্ধা হবেন। 
    ৭) প্রজাতন্ত্রের স্বরূপ : ম্যাকিয়াভেলি প্রজাতান্ত্রিক শাসনকে ‘মুক্ত রাষ্ট্র’ (Free State) বলে অভিহিত করেছেন। তাঁর মতে, প্রজাতন্ত্র হল শ্রেষ্ঠতর শাসন ব্যবস্থা। এবং ‘জনগণের কন্ঠই হল এখানে ঈশ্বরের কণ্ঠ

    ৮) ভালো মন্দের বিশ্লেষণ : তিনি সিসেরোর ‘প্রাকৃতিক আইন’ তত্ত্বের বিরোধিতা করেছেন। তাঁর মতে, যে বিষয়গুলি রাষ্ট্র বা সমাজের স্বার্থ রক্ষা করে, তা-ই ভালো, আর যেগুলো  তা করে না, সেগুলোই মন্দ।

গভীরভাবে বিশ্লেষণ করলে মেকিয়াভেলির রাষ্ট্রতত্ত্বে কিছু সীমাবদ্ধতা লক্ষ্য করা যায়। তা সত্ত্বেও আধুনিক রাষ্ট্রতত্ত্বের উদ্ভব ও বিকাশের তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। প্রকৃত অর্থেই তিনি ছিলেন আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তার পথপ্রদর্শক
-------xx------

বিকল্প প্রশ্ন সমূহ : এভাবেও আসতে পারে

  1. ম্যাকিয়াভেলি কে ছিলেন? তাঁর লেখা ‘দ্য প্রিন্স’ গ্রন্থের বিষয়বস্তু সংক্ষেপে লেখো।
  2. কাকে, কেন ‘আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তা জনক’ বলা হয়?
  3. আধুনিক রাষ্ট্রতত্ত্বের উদ্ভব ও বিকাশের মেকিয়াভেলির অবদান সংক্ষেপে লেখো।

এ বিষয়ে আরো কিছু প্রশ্ন ও উত্তর :


মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় প্রশ্নগুলো দেখ

নব্য প্রস্তর যুগ ও তার বৈশিষ্ট লেখো।

নব্য প্রস্তর যুগের সময়কাল উল্লেখ করো। এই সময়ের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট লেখো। নব্য প্রস্তর যুগ : প্রাগৈতিহাসিক যুগের শেষ পর্বকে বলা হয় নব্য প্রস্তর যুগ বা Neolithic Age । এই পর্বে আদিম মানুষ খাদ্য সংগ্রাহক থেকে ক্রমশঃ  খাদ্য উৎপাদক শ্রেণিতে রূপান্তরিত হয়। আনুমানিক ৮০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে 4000 খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত সময়কালকে নব্য প্রস্তর যুগ বলা হয়। নব্য প্রস্তর যুগের বৈশিষ্ট্য : ১) এই যুগের মানুষ খাদ্য উৎপাদন শুরু করে। অর্থাৎ কৃষি কাজের সূচনা হয়। ২) পশু শিকারের সাথে সাথে পশুপালনের সূচনা হয়। ৩) হাতিয়ার গুলি খুবই সূচালো, ধারালো ও ক্ষুদ্র আকারের হয়। ৪) চাকার ব্যবহার শুরু হয় ৫) প্রথম আগুন জ্বালানোর কৌশল আবিষ্কার করে  ৬) যাযাবর জীবন ছেড়ে স্থায়ী বসতি গড়ে উঠতে থাকে। এই ধরণের আরও প্রশ্ন ও উত্তর  পেতে  এখানে ক্লিক করো ।

প্রাচীন ভারতে নারীর সামাজিক অবস্থান

 প্রাচীন ভারতে নারীর সামাজিক অবস্থানের ওপর একটি প্রবন্ধ রচনা করো। সমাজে নারীর অবস্থান : প্রাচীনকালে গ্রীস ও রোমের মত ভারতীয় নারীরাও সমাজে বিশিষ্ট স্থান অধিকার লাভ করেছিল। তবে তা মূলত উচ্চশ্রেণির মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল।  ঋগবৈদিক যুগে নারীর অবস্থান :  নারীর গুরুত্ব : পুত্র সন্তান কাম্য হলেও নারীরা মেটেও অবহেলিত ছিল না।  নারী শিক্ষা : নারীরা যথেষ্ট শিক্ষার সুযোগ লাভ করেছিল। এ যুগের উল্লেখযোগ্য বিদুষী নারী ছিলেন - লোপমুদ্রা, ঘোষা, অপলা মমতা প্রমুখ। বেদ পাঠের অধিকার : এই সময় নারীদের বেদ পাঠের অধিকার ছিল বলেও জানা যায়। এমনকী বেদের স্তোত্র রচনায় অংশ নিয়েছিল বলে জানা যায়।  পরবর্তী বৈদিক যুগে নারীর অবস্থান : নারীর গুরুত্ব হ্রাস : এই সময় নারী বেদ পাঠের অধিকার হারায়।  নারী শিক্ষা উপেক্ষিত : তৈত্তিরীয় সংহিতায় নারী শিক্ষার প্রয়োজন নেই বলে জানান হয়। ফলে নারী শিক্ষা ব্যাহত হয়। তা সত্ত্বেও এ সময় কোন কোন নারী উচ্চশিক্ষায় কৃতিত্ব অর্জন করেন। যেমন, গার্গী, মৈত্রেয়ী প্রমুখ।  প্রতিবাদী আন্দোলনের যুগে নারীর অবস্থান : নারী শিক্ষা : বৌদ্ধ গ্রন্থ বিনয়পিটক থেকে জানা যায় এই সময় নারীদের বিদ্যা শিক্ষাকে স্বীকৃতি

প্রাক-ঐতিহাসিক (প্রাগৈতিহাসিক) যুগ কাকে বলে ?

  প্রাক-ঐতিহাসিক যুগ মানব সভ্যতার সূচনা হয় আজ থেকে ৩৬ লক্ষ্য বছর আগে। এই সময় থেকে লিপির ব্যবহার শুরু হওয়ার মধ্যবর্তী সময়কালকে প্রাগৈতিহাসিক যুগ বলা হয়। এই সময়ের ইতিহাস রচনার কোন লিখিত উপাদান পাওয়া যায় না। ফলে শুধুমাত্র প্রত্নতাত্বিক উপাদানের ওপর ভিত্তি করেই ইতিহাস লেখা হয়। তবে সব দেশে একই সময়ে প্রাগৈতিহাসিক যুগের সূচনা হয়নি।  -----🙏---- বিকল্প প্রশ্ন : ১) প্রাগৈতিহাসিক যুগ বলতে কী বোঝো? আরও পড়ো : ১)   প্রাগৈতিহাসিক যুগের বৈশিষ্ট্য কী ছিলো ?                     ২) প্রাগৈতিহাসিক যুগকে কয়ভাগে ভাগ করা হয় ও কী কী ? এই ধরণের আরও প্রশ্ন ও উত্তর  পেতে  এখানে ক্লিক করো ।

মধ্যপ্রস্তর যুগ বলতে কোন সময়কালকে বোঝানো হয়? এই যুগের বৈশিষ্ট্য লেখো

'মধ্যপ্রস্তর যুগ' ও তার বৈশিষ্ট্য প্লেইস্টোসিন যুগের শেষ পর্ব ( ১৫ হাজার বছর আগে ) থেকে হোলোসিন যুগের সূচনা পর্ব ( ১০ হাজার বছর ) পর্যন্ত সময়কালকে মধ্যপ্রস্তর যুগ বলে। অন্যভাবে বলা বলা যায়, খাদ্য সংগ্রহকারী প্রাচীন প্রস্তর যুগ এবং খাদ্য উৎপাদনকারী নব্য প্রস্তর যুগের মধ্যবর্তী সময়কালকে 'মধ্য প্রস্তর যুগ' বলা হয়। মধ্য প্রস্তর যুগের বৈশিষ্ট্য ঃ ১) সময়কাল : মধ্য প্রস্তর যুগ খ্রিষ্টপুর্ব ১৫ হাজার বছর থেকে ১০ হাজার বছর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। ২) হাতিয়ার :  এই যুগের ( মধ্য প্রস্তর যুগ ) হাতিয়ারগুলি প্রাচীন প্রস্তর যুগের চেয়ে উন্নত ও আকারে ছোটো ছিল। পাথর ছাড়া জীবজন্তুর হাড়, দাঁত ইত্যাদিও হাতিয়ার তৈরিতে ব্যবহার করা হত। ৩) জীবিকা ও জীবনযাপন : মধ্য প্রস্তর যুগের মানুষের প্রধান জীবিকা ছিল পশু শিকার ও ফলমূল সংগ্রহ। এবং জীবনযাত্রা ছিল অর্ধ যাযাবর প্রকৃতির। ৪) কৃষিকাজ : যুগের শেষ পর্বে মানুষ কৃষিকাজের সূচনা করে। ৫) পোষাক :  মধ্য প্রস্তর যুগের মানুষ প্রাচীন প্রস্তর যুগের মত গাছের ছাল ও পশুর চামড়া দিয়ে পোশাক বানাত। তবে এই পোশাক আগের চেয়ে উন্নতমানের ছিল। ৬) যানবাহন : এই যুগের মানুষ ক

মহাজনপদ কী? মহাজনপদের বৈশিষ্ট্য সংক্ষেপে লেখো।

মহাজনপদ কী? মহাজনপদের বৈশিষ্ট্য সংক্ষেপে লেখো। মহাজনপদ ও মহাজনপদের বৈশিষ্ট্য  What is Mahajanapada? Briefly write the characteristics of Mahajanapada. মহাজনপদ কী : 'মহা' অর্থ বৃহৎ। 'জনপদ' কথার অর্থ 'নির্দিষ্ট ভূখণ্ডসহ জনসমষ্টি। অর্থাৎ  ক্ষুদ্র রাজ্য। খ্রীষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকের আগে ভারতে উপজাতি গোষ্ঠীভিত্তিক ছোট ছোট জনপদ গড়ে উঠেছিল। এই জনপদ গুলি পরস্পরের ভূখণ্ড দখল করার তাগিদে নিজেদের মধ্যে সব সময় সংঘর্ষে লিপ্ত থাকতো। এই সংঘর্ষে জয় পরাজয়ের সূত্র ধরেই উত্তর ভারতে একাধিক জনপদ সংযুক্ত হয়ে যেত। ফলে বৃহৎ জনপদ বা রাজ্যের জন্ম হয়। এই ধরনের বৃহৎ জনপদ বা রাজ্যগুলি ' মহাজনপদ' নামে পরিচিত হয়। খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীর তিনটি উল্লেখযোগ্য মহাজনপদের নাম হলো মগধ (রাজতান্ত্রিক), বৃজি ও মল্ল (প্রজাতান্ত্রিক)। মহাজনপদের বৈশিষ্ট্য : এই মহাজনপদগুলির ভৌগোলিক অবস্থান ও রাজনৈতিক চরিত্র বিশ্লেষণ করলে কয়েকটি বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়।           ১) উত্তর ভারত কেন্দ্রিক অবস্থান :   ডক্টর হেমচন্দ্র রায়চৌধুরী মতে, মহাজনপদ গুলির অধিকাংশের অবস্থান ছিল বিহার, উত

জনপদ কী? প্রাচীন ভারতে জনপদ গড়ে ওঠার কারণ ব্যাখ্যা করো।

জনপদ কী? কীভাবে প্রাচীন ভারতে জনপদের উৎপত্তি হয়? জনপদ কী : 'জন' শব্দের অর্থ উপজাতি বা জনগোষ্ঠী। 'পদ' শব্দের অর্থ পা। চার্লস ল্যানম্যান -এর মতে, নির্দিষ্ট কোন জাতিগোষ্ঠী যখন কোন নির্দিষ্ট কোন ভৌগোলিক এলাকায় বসতি গড়ে তোলে তখন সেই ভৌগোলিক এলাকাকে  'জনপদ' বলে। কৌটিল্য জনপদ বলতে  নির্দিষ্ট ভূখণ্ড ও জনসমষ্টিকে বুঝিয়েছেন। এই জনপদে একদিকে থাকবে বিচক্ষণ উচ্চবর্ণের মানুষ বা প্রভু। অন্যদিকে থাকবে - ১) পর্যাপ্ত পরিমাণ উর্বর জমি এবং ২) সেই ভূখন্ডে থাকবে প্রচুর পরিশ্রমী কৃষক যাদের কর প্রদানের চাপ ও শাস্তি সহ্য করার ক্ষমতা থাকবে।  জনপদ গড়ে ওঠার কারণ (পটভূমি) : আর্যদের আগমন : আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০ অব্দে আর্যরা ভারতে প্রবেশ করে। এর ছিল যাযাবর প্রকৃতির । কারণ, পশু খাদ্যের সন্ধানে তারা বসবাসের জায়গা পরিবর্তন করত। তবে তারা গোষ্ঠীবদ্ধ জীবন যাপন করত। তাই এদের 'জন' (জনগোষ্ঠী বা উপজাতি) বলা হত।  জনসংখ্যা বৃদ্ধি : সপ্ত সিন্ধু এলাকায় উর্বর ভূমির কল্যাণে আর্যদের মধ্যে স্থায়ীভাবে বসবাসের প্রবণতা বাড়ে। ফলে নির্দিষ্ট এলাকায় জনসংখ্যা বাড়তে থাকে। ক্রমশ তারা অর্ধ-যাযাবর জীবনে

প্রাচীন গ্রিসে নগররাষ্ট্র গড়ে ওঠার কারণ বা পটভূমি বর্ননা করো।

প্রাচীন গ্রিসে নগররাষ্ট্র গড়ে ওঠার কারণ বা পটভূমি Describe-the-reasons-or-background-for-the-development-of-city-states-in-ancient-Greece পলিস শব্দের অর্থ ' নগররাষ্ট্র '। খ্রিষ্টপূর্ব পঞ্চম থেকে ষষ্ঠ শতকে মধ্যবর্তী সময়ে গ্রিসে প্রায় ১৫০০ টি ছোট ছোট রাষ্ট্র বা সিটি স্টেট গড়ে ওঠে। এগুলির যাবতীয় কাজকর্মে নাগরিকরাই প্রত্যক্ষভাবে অংশ গ্ৰহণ করত। এই ছোট রাষ্ট্রগুলো পলিস বা নগর-রাষ্ট্র নামে পরিচিত। যেমন - এথেন্স, স্পার্টা ইত্যাদি। নগররাষ্ট্র গড়ে ওঠার কারণ বা পটভূমি প্রাচীন গ্রিসে নগররাষ্ট্র গড়ে ওঠার পটভূমি বিশ্লেষণ করলেই নগররাষ্ট্র গড়ে ওঠার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ সামনে আসে।  ১) বৈদেশিক আক্রমণ ও  অক্টোপলিস  : আনুমানিক ১০০০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে গ্রীকরা বৈদেশিক আক্রমণের ভয়ে গ্রিসের বিভিন্ন পাহাড়ের শিখরে শক্তিশালী কেন্দ্র গড়ে তোলে। এগুলো 'অক্টোপলিস' নামে পরিচিত। এই অক্টোপলিসকে কেন্দ্র করে ক্রমশ নগর গড়ে ওঠে এবং এই নগরকে কেন্দ্র করে পরবর্তীকালে নগররাষ্ট্র বা পলিস গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়।  ২) স্থানীয় বাজার : আস্তে আস্তে এই  'অক্টোপলিস'গুলোর কাছেই স্থানীয় বাজার গড়ে উঠতে থাকে।

ঐতিহাসিক যুগ কাকে বলে? এর বৈশিষ্ঠগুলো উল্লেখ করো। উদাহরণ দাও।

ঐতিহাসিক যুগ কাকে বলে? এর বৈশিষ্ঠগুলো উল্লেখ করো। উদাহরণ দাও।  ঐতিহাসিক যুগ বলতে সেই সময়কালকে বোঝায়, যখন ১) মানুষ লিখন পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন, ২) তাদের জীবনযাপন প্রণালী, সমাজ, সংস্কৃতি ও সভ্যতার বিবররণ রেখে গেছেন, এবং সেই সব বিবরণের পাঠোদ্ধার সম্ভব হয়ছে।  উদাহরণ হিসাবে মিশরিয় ও মেসোপটেমিয়া সভ্যতার কথা বলা যায়।   খ্রিস্টপূর্ব ৩০০০ অব্দে মিশরে এবং  খ্রিস্টপূর্ব ৩২৬ অব্দে ভারতে, (আলেকজান্ডারের ভারত আক্রমণের সময়) এই যুগের সূচনা ধরা হয় । ঐতিহাসিক যুগের বৈশিষ্ট্য : ১) এই যুগে মানুষের লিপিজ্ঞান ছিল।  ২) এই লিপির পাঠোদ্ধার সম্ভব হয়েছে, ৩) এই যুগের সময়কাল পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় ভিন্ন ভিন্ন সময়ে সূচনা হয়েছে।  এই ধরণের আরও প্রশ্ন ও উত্তর  পেতে  এখানে ক্লিক করো ।

প্রাচীন প্রস্তর যুগ, মধ্য প্রস্তর যুগ ও নব্য প্রস্তর যুগের মধ্যে পার্থক্য দেখাও।

প্রাচীন, মধ্য ও নব্য প্রস্তর যুগের মধ্যে পার্থক্য বাংলা 👉 English অথবা,  প্রাচীন প্রস্তর যুগ, মধ্য প্রস্তর যুগ ও নব্য প্রস্তর যুগের মধ্যে তুলনা করো।

প্রাচীন প্রস্তর বলতে কী বোঝ? প্রাচীন প্রস্তর যুগের সময়কাল উল্লেখ করো। এই যুগের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।

প্রাচীন প্রস্তর যুগ বলতে কী বোঝ? প্লেইস্টোসিন যুগের শেষ ভাগে (৫০ হাজার - ১৫ হাজার আগে) পৃথিবীতে প্রায়-মানুষেরা ( হোমো ইরেক্টাস)  পাথরকে আকারগত পরিবর্তন না করেই হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করত। তাই তাদের হাতিয়ারগুলি হত অমসৃণ ও বৃত্তাকার। এই ধরণের অস্ত্র ব্যবহারকারী মানুষের সময়কালকে (যুগকে) 'প্রাচীন প্রস্তর যুগ' বলা হয়। প্রাচীন প্রস্তর যুগের সময়কাল : প্রাচীন প্রস্তর যুগের শুরু হয় ৫০ হাজার বছর আগে এবং শেষ হয় প্রায় ১৫ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দে প্রাচীন প্রস্তর  যুগের বৈশিষ্ট্য ঃ প্রাচীন প্রস্তর যুগের শুরু হয় ৫০ হাজার বছর আগে এবং শেষ হয় প্রায় ১৫ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দে এই যুগের মানুষ বিভিন্ন ধরণের পাথর ও হাড়ের তৈরি হাতিয়ার ব্যবহার করত। এই পর্বের মানুষ পাথরকে আকারগত পরিবর্তন না করেই হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করত। তাই তাদের হাতিয়ারগুলি হত অমসৃণ ও বৃত্তাকার। এই যুগের শেষ দিকে মানুষ তীরধনুক আবিষ্কার করে। এই পর্বের মানুষ জীবিকা নির্বাহ করত পশু শিকার, ফলমূল সংগ্রহ এবং মাছ ধরে। এই সময় মানুষ আগুনের ব্যবহার জানত না। তাই তারা কাঁচা মাংস খেত। মানুষ ছোট ছোট গোষ্ঠীবদ্ধ হয়ে বসবাস করত। অর্থাৎ তাদের মধ্যে