সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

রুশোর রাষ্ট্রদর্শন ও তার মূল্যায়ন

রুশোর রাষ্ট্রদর্শন সম্পর্কে আলোচনা করো। রুশোর রাষ্ট্রদর্শন ও তার মূল্যায়ন আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তার জগতে এক অনন্য সাধারণ ব্যক্তিত্ব হলেন ফরাসি চিন্তাবিদ ও দার্শনিক জ্যাঁ জ্যাঁক রুশো। তাঁর রাষ্ট্রদর্শন পরবর্তীকালে ইউরোপের জ্ঞানদীপ্তির যুগ এবং বিশেষত ফরাসি বিপ্লবকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিল। রুশোর রাষ্ট্রদর্শনের উৎস : প্লেটোর প্রভাব : রুশোর রাষ্ট্রচিন্তার ওপর প্লেটোর চিন্তাধারার গভীর প্রভাব পড়েছিল। প্লেটোর রাজনৈতিক আনুগত্য , যা আইন ও শক্তির উৎস হিসাবে বিবেচিত এবং লোকসমাজ , যা নৈতিক মূল্যবোধের প্রতিনিধিত্ব করে। রুশো প্লেটোর এই মৌলিক চিন্তাধারার দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বলেছিলেন, "সমাজ ছাড়া ব্যক্তির পক্ষে কোনও ক্ষমতা অর্জন সম্ভব নয়।" লকের প্রভাব : অন্যদিকে জন লকের স্বাভাবিক অধিকার , সম্মতির তত্ত্ব , লোকসমাজের সর্বভৌমিকতা প্রভৃতির দ্বারা প্রভাবিত হয়ে তিনি তাঁর রাষ্ট্রচিন্তার তত্ত্ব প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ল্যাস্কির মতে, "রুশোর শিক্ষাটি লকের খনন করা চ্যানেলের একটি বিস্তৃত সমাপ্তি মাত্র।" ("Rousseau's teaching is only a broad endingof the channel dug by Locke.") তবে, মনে ...

নতুন রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সপ্তম হেনবির অবদান

‘নতুন রাজতন্ত্র’ প্রতিষ্ঠায় সপ্তম হেনবির অবদান কী ছিল? নতুন রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সপ্তম হেনবির অবদান সপ্তম হেনরি ছিলেন ইংল্যান্ডের টিউডর রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা। ১৪৮৫ সালে তিনি যে রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন, তা ইংল্যান্ডের ইতিহাসে ‘নতুন রাজতন্ত্র’ বা ‘ নব্য রাজতন্ত্র ’ নামে পরিচিত। এটা তিনি সম্ভব করেছিলেন, ইংল্যান্ডের শাসনতন্ত্রে বেশ কিছু অভিনব পরিবর্তন সাধনের মাধ্যমে। যেমন, ১) ব্যারনদের ক্ষমতা হ্রাস :  এর আগে ইংল্যান্ডের রাজপরিবারগুলোর সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করে সামন্তপ্রভুরা (ব্যারন) নিজেদের ক্ষমতা ও প্রতিপত্তি বৃদ্ধি করতেন। সপ্তম হেনরি এদের পরিবর্তে স্পেন, ফ্রান্স ও স্কটল্যান্ডের রাজপরিবারগুলির সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপনের নীতি গ্রহণ করেন। ফলে ব্যারনদের ক্ষমতা সীমাবদ্ধ হয়ে যায়। ২) সামন্ত প্রভুদের দমন :  ১৪৮৭ সালে তিনি ‘ স্টার চেম্বার আইন ’ পাস করে সামন্তপ্রভুদের ব্যক্তিগত সেনাবাহিনী রাখার প্রথা পুরোপুরি নিষিদ্ধ করে দেন। ৩) মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মর্যাদা বৃদ্ধি : সরকারি উচ্চপদ ও মন্ত্রীপদে অভিজাত সামন্তদের নিয়োগ না করে তিনি মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষকে উচ্চপদে নিয়োগের ...

ম্যাকিয়াভেলির রাষ্ট্রচিন্তার বৈশিষ্ট্য

ম্যাকিয়াভেলির রাষ্ট্রচিন্তার বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ করো। ম্যাকিয়াভেলির রাষ্ট্রচিন্তার বৈশিষ্ট্য মেকিয়াভেলি হচ্ছেন একজন আদি-আধুনিক (Early Modern) রাষ্ট্রচিন্তাবিদ। জন্ম ইতালির ফ্লোরেন্স শহরে,  ১৪৬৯ সালে। তিনি ছিলেন একাধারে একজন কৃতি নাট্যকার, ঐতিহাসিক ও রাষ্ট্রচিন্তাবিদ। আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তার ভিত্তি প্রতিষ্ঠার কারণে তিনি ‘ আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তার জনক ’ হিসাবে খ্যাতি লাভ করেছেন। মেকিয়াভেলির রাষ্ট্রচিন্তার বৈশিষ্ট্য : নিকোলো মেকিয়াভেলি তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ ‘ দ্য প্রিন্স ’-এ আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তার কিছু বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করেছেন।     ১)  মানব প্রকৃতি : ‘দা প্রিন্স’ গ্রন্থে ম্যাকিয়াভেলি মানুষকে একটি আত্মকেন্দ্রিক, স্বার্থপর, লোভী, সুবিধাবাদী ও ন্যায়নীতিবোধহীন চরিত্ররূপে বর্ণনা করেছেন। তিনি লিখেছেন, এই কারণে মানুষে মানুষে বিবাদ ও সংঘর্ষ দেখা দেয় এবং রাষ্ট্রে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়।     ২)  ধর্ম ও নীতিবোধ :   ম্যাকিয়াভেলি ধর্ম ও নীতিবোদের সঙ্গে রাষ্ট্রনীতির পার্থক্য সুস্পষ্ট করেছেন।  তাঁর মতে শাসক তাঁর ব্যক্তিগত ধর্মবিশ্বাস ও নীতিবোধের উর্ধ্বে উঠে কঠোরভ...

আলাউদ্দিন খলজি কী একজন ধর্মনিরপেক্ষ সুলতান ছিলেন?

আলাউদ্দিন খলজি কী ধর্মনিরপেক্ষ সুলতান ছিলেন? আলাউদ্দিন খলজি কী একজন ধর্মনিরপেক্ষ সুলতান ছিলেন? আলাউদ্দিন খলজী ছিলেন সুলতানি যুগের খলজি রাজবংশের সবচেয়ে শক্তিশালী শাসক। রাষ্ট্র পরিচালনায় বিশেষ দক্ষতার জন্য তিনি ইতিহাসে খ্যাতি লাভ করে আছেন। ‘তারিখ-ই-ফিরোজশাহী’ গ্রন্থ থেকে জানা যায়, তিনি রাষ্ট্রনীতি ও ধর্মনীতিকে দুটি স্বতন্ত্র বিষয় বলে দৃঢ়ভাবে ঘোষণা করেছিলেন। ধর্মনিরপেক্ষ শাসকের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হল, ধর্ম ও রাজনীতিকে আলাদা করে দেখা এবং রাজনীতিতে ধর্মীয় অনুশাসনকে প্রয়োজনে উপেক্ষা করা। কোন শাসক কঠোরভাবে ধর্মীয় অনুশাসন দ্বারা রাষ্ট্রনীতি পরিচালনা করলে তাঁকে ধর্মনিরপেক্ষ নয়, ধর্মাশ্রয়ী শাসক বলা হয়। 🔖এ প্রসঙ্গে আরও পড়ো :  ধর্মশ্রয়ী রাষ্ট্র ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য এদিক থেকে বিচার করলে আলাউদ্দিন খলজির শাসন ধর্মাশ্রয়ী ছিল না। কারণ, বেয়ানার কাজী ও বিশিষ্ট কোরআন বিশারদ মুঘিসউদ্দিন একসময় অভিযোগ করেছিলেন সুলতানের কার্যকলাপ শরীয়তের আইন অনুযায়ী সম্পন্ন হচ্ছে না। এই অভিযোগের উত্তরে আলাউদ্দিন খলজী বলেছিলেন,  আমি অন্য কোন আইন জানিনা, রাষ্ট্রের প্রয়োজনে আমি যা প্রণয়ন করি, আমার...

টমাস ক্রমওয়েলের কার্যাবলী মূল্যায়ন

টমাস ক্রমওয়েলের কার্যাবলী / সংস্কারগুলোর মূল্যায়ন করো। টমাস ক্রমওয়েলের কার্যাবলী মূল্যায়ন ইংল্যান্ডের টিউটর বংশের রাজা অষ্টম হেনরির প্রধানমন্ত্রী ছিলেন টমাস ক্রময়েল। ‘ নব্য রাজতন্ত্রে ’ রাজার ক্ষমতা বৃদ্ধিই ছিল তাঁর প্রধান লক্ষ্য। এই লক্ষ্য পূরণে তিনি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ (সংস্কার) করেছিলেন। এই পদক্ষেপগুলির মাধ্যমে টমাস ক্রমওয়েল যে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধন করেছিলেন, তা ইংল্যান্ডের ইতিহাসে ‘ টিউডর বিপ্লব’ নামে পরিচিত। টমাস ক্রমওয়েল বিভিন্ন পদক্ষেপ / সংস্কার : বিবাহ সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান :   অষ্টম হেনরির কোন পুত্রসন্তান ছিল না। এই পরিস্থিতিতে তিনি অ্যানবোলিন নামে এক মহিলাকে বিবাহ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তৎকালীন নিয়ম অনুযায়ী বর্তমান স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ ও পোপের অনুমোদন ছাড়া এই বিবাহ বৈধ নয়। কিন্তু পোপ বিবাহবিচ্ছেদে অনুমোদন দিতে অস্বীকার করলে সমস্যা তৈরি হয়। এই পরিস্থিতিতে ক্রমওয়েল রাজার পুনর্বিবাহের অনুকূলে আইন (‘ অ্যাক্ট অব অ্যাপিলস’ ) প্রণয়ন করে এই সমস্যার সমাধান করেন। রাজার ক্ষমতা বৃদ্ধি :   রাজার ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য একাধারে তিনি পাঁচটি আইন পাশ ...

টমাস ক্রমওয়েল কে ছিলেন?

টমাস ক্রমওয়েল কে ছিলেন? টমাস ক্রমওয়েল কে ছিলেন? টমাস ক্রমওয়েল ছিলেন একজন কর্মকারের সন্তান। প্রথম জীবনে তাঁর পেশা ছিল সৈনিকবৃত্তি। পরবর্তীতে আইন পাস করে শুরু করেন আইন ব্যবসা। অষ্টম হেনরির রাজত্বকালে তিনি বৃটেনের কমন্স সভার সদস্যপদ লাভ করেন ১৫৩৩ সালে অষ্টম হেনরি কর্তৃক ভিকার জেনারেল বা মুখ্য ধর্মীয় আধিকারিক নিযুক্ত হন। অষ্টম হেনরির সমর্থনে অ্যাক্ট অফ অ্যানেটস, অ্যাক্ট অফ অ্যাপিলস, অ্যাক্ট অফ সাকসেশন, অ্যাক্ট অফ সুপ্রিমেসি, ট্ৰিজন, অ্যাক্ট অফ প্লুরালিটিস ইত্যাদি আইনের মাধ্যমে তিনি ইংল্যান্ডের শাসন ও ধর্ম ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার সাধন করেন । তাঁর এই সংস্কারের ফলে ইংল্যান্ডের আধুনিক শাসনতান্ত্রিক কাঠামোর বিকাশ ঘটে। যেমন , ইংল্যান্ডের চার্চ ও রাষ্ট্র —উভয়ের ওপর রাজার সার্বভৌমত্ব স্থাপিত হয় পোপের ক্ষমতা খর্ব করা হয়। শাসনতান্ত্রিক কাঠামোয় রাজার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় পার্লামেন্ট বিভিন্ন অধিকার লাভ করে। এইভাবে, ১) ইংল্যান্ডের শাসন ব্যবস্থায় রাজা ও পার্লামেন্টের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠিত হয়। ২) রাজনীতিতে পোপের প্রভাব কমে যায়। ঐতিহাসিক জি আর এলটন  এই পরিবর্তন গুলির প্রকৃত গু...

অষ্টম হেনরি কে ছিলেন?

অষ্টম হেনরি কে ছিলেন? অষ্টম হেনরি কে ছিলেন? অষ্টম হেনরি হলেন ইংল্যান্ডের টিউটর বংশের দ্বিতীয় রাজা। ১৫০৯ সালে পিতা সপ্তম হেনরির মৃত্যুর পর তিনি ইংল্যান্ডের সিংহাসনে বসেন। তাঁর আমলে টিউডর রাজতন্ত্র একটি শক্তিশালী রাজতন্ত্রে পরিণত হয়। আর এজন্যে তাঁকে নতুন রাজতন্ত্রের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা বলা হয়। অষ্টম হেনরি তাঁর উপদেষ্টা মন্ত্রী টমাস ক্রমওয়েলকে দিয়ে ইংল্যান্ডের শাসন ও ধর্ম ব্যবস্থায় বেশ কিছু যুগান্তকারী সংস্কার সাধন করেন। অ্যাক্ট অফ অ্যানেটস, অ্যাক্ট অফ অ্যাপিলস, অ্যাক্ট অফ সাকসেশন, অ্যাক্ট অফ সুপ্রিমেসি, ট্ৰিজন, অ্যাক্ট অফ প্লুরালিটিস ইত্যাদি আইনের মাধ্যমে তিনি এই সংস্কার কার্যকর করেন। তাঁর এই সংস্কারের ফলে ইংল্যান্ডের আধুনিক শাসনতান্ত্রিক কাঠামোর বিকাশ ঘটে। এই শাসনতান্ত্রিক কাঠামোর একদিকে ছিল ইংল্যান্ডের রাজার ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়া, অপরদিকে ছিল পার্লামেন্টকে বিভিন্ন অধিকার দেওয়া হয় ঘটনা। এভাবে অষ্টম হেনরির শাসনতান্ত্রিক ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠিত হয়। --------xx------- বিকল্প প্রশ্ন সমূহ : কাকে কেন নতুন রাজতন্ত্রের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা বলা হয়? কোন কোন আইনের মাধ্যমে নতুন রাজতন্ত্রকে শ...

‘নব্য রাজতন্ত্র’ বলতে কী বোঝো?

‘নব্য রাজতন্ত্র’ বলতে কী বোঝো? ‘নব্য রাজতন্ত্র’ বলতে কী বোঝো? ইংল্যান্ডের টিউটর বংশীয় শাসক সপ্তম হেনরি (হেনরি টিউডর) ১৪৮৫ সালে ইংল্যান্ডে যে রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন তাকে নতুন রাজতন্ত্র বা নব্য রাজতন্ত্র বলা হয়। কারণ, তিনি ইংল্যান্ডের সংবিধান বা শাসনতান্ত্রে বেশ কিছু অভিনব পরিবর্তন এনেছিলেন। এই পরিবর্তনগুলো নব্য রাজতন্ত্রের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হিসেবে বিবেচিত হয়। এই পরিবর্তনগুলো (বা বৈশিষ্ট্য) হল : ইংল্যান্ডের শাসনব্যবস্থায়  ব্যারন ও সামন্ত প্রভুদের ক্ষমতা হ্রাস করে ,  পার্লামেন্টের ক্ষমতা বৃদ্ধি  করা হয়, ইংল্যান্ডের যুক্তিবাদ চিন্তা চেতনার প্রসার ঘটানো হয় এবং  ধর্ম সংস্কার আন্দোলনকে উৎসাহিত করা হয় । ফলে জন্ম নেয় প্রোটেস্ট্যান্ট ধর্মীয় মতবাদ। সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে  মধ্যবিত্ত শ্রেণীর ক্ষমতা ও মর্যাদা  বৃদ্ধি করা হয়,   বিচার বিভাগের মর্যাদা বৃদ্ধির চেষ্টা করা হয়।   বিচার ব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা হয়। ‘ অ্যাক্ট  অফ সুপ্রিমেসি ’ পাস করার মাধ্যমে ইংল্যান্ডের চার্চ ও রাষ্ট্র —উভয়ের ওপর রাজার সার্বভ...

‘অ্যাক্ট অফ সুপ্রিমেসি’ কী?

‘অ্যাক্ট  অফ সুপ্রিমেসি’ কী? অ্যাক্ট অফ সুপ্রিমেসি’ কী? অ্যাক্ট অফ সুপ্রিমেসি : ‘ অ্যাক্ট অফ সুপ্রিমেসি ’ (Act of Supremacy) হল একটি ধর্মীয় সংস্কার আইন, যা ইংল্যান্ডের রাজা অষ্টম হেনরি তাঁর প্রধান ধর্মীয় আধিকারিক টমাস ক্রমওয়েলের  নেতৃত্বে পাস করেন।  এই আইনের উদ্দেশ্য ছিল আনুষ্ঠানিকভাবে রাজাকে দেশের ধর্মব্যবস্থার প্রধান হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া। অ্যাক্ট অফ সুপ্রিমেসির উদ্দেশ্য : এই আইন পাশের আগে পর্যন্ত ইংল্যান্ডের চার্চ-এর উপর পোপের একাধিপত্য ছিল। ফলে পোপ পরোক্ষভাবে রাজাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারত। ‘ অ্যাক্ট   অফ সুপ্রিমেসি ’র মাধ্যমে — ইংল্যান্ডের চার্চগুলোর উপর পোপের এই আধিপত্য লুপ্ত করা হয়। ছোট ছোট মঠগুলোকে বাজেয়াপ্ত করা হয় এবং বড় মাঠ গুলোর ওপর রাজা তথা রাষ্ট্রের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করা হয়। অ্যাক্ট অফ সুপ্রিমেসির গুরুত্ব : এভাবে,  ‘ অ্যাক্ট  অফ সুপ্রিমেসি ’ পাস করার মাধ্যমে ইংল্যান্ডের চার্চ ও রাষ্ট্র —উভয়ের ওপর রাজার সার্বভৌমত্ব স্থাপিত হয় এবং পোপের ক্ষমতা খর্ব করা হয়। ----------xx------- বিকল্প প্রশ্ন সমূহ : ‘ অ্যাক্ট অফ সুপ্রিমেসি ’ কী ধরনের আই...

সপ্তম হেনরি কে ছিলেন?

সপ্তম হেনরি কে ছিলেন? সপ্তম হেনরি কে ছিলেন? সপ্তম হেনরি ছিলেন ইংল্যান্ডের টিউডর বংশের প্রথম রাজা, যার প্রকৃত নাম ছিল হেনরি টিউডর। ১৪৮৫ থেকে ১৫০৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি ইংল্যান্ডের রাজা ছিলেন। দীর্ঘ ৩০ বছরের যুদ্ধে, যা ইংল্যান্ডের ইতিহাসের ‘ গোলাপের যুদ্ধ’ নামে খ্যাত, ইয়র্ক বংশীয় রাজা তৃতীয় রিচার্ডকে পরাজিত করে ১৪৮৫ সালে ইংল্যান্ডের সিংহাসনে বসেন। শুরু হয় ইংল্যান্ডে নতুন রাজতন্ত্রের যুগ। এই নতুন রাজতন্ত্র ‘ নিয়মতান্ত্রিক রাজতন্ত্র ’ বা ‘ নব্য রাজতন্ত্র ’ নামে পরিচিত। প্রকৃতপক্ষে তাঁর হাত ধরেই ইংল্যান্ডে নিয়মতান্ত্রিক রাজতন্ত্রের পথ চলা শুরু হয়। এইসময় তিনি কয়েকটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। ইংল্যান্ডের শাসন ব্যবস্থায় ব্যারন ও সামন্ত প্রভুদের ক্ষমতা হ্রাস , পার্লামেন্টের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, ইংল্যান্ডের যুক্তিবাদ মাথা তুলে দাঁড়ায়।  তারই সূত্র ধরে শুরু হয় ধর্ম সংস্কার আন্দোলন । জন্ম নেয় প্রোটেস্ট্যান্ট ধর্মীয় মতবাদ। শাসন ব্যবস্থায় মধ্যবিত্ত শ্রেণীর ক্ষমতা ও মর্যাদা বৃদ্ধি পায়,   বিচার বিভাগের মর্যাদা বৃদ্ধি পায় এবং বিচার ব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষ...

সিসেরো কে ছিলেন?

 সিসেরো কে ছিলেন? সিসেরো কে ছিলেন? সিসেরোর পুরো নাম মার্কাস টিউলিয়াস সিসেরো । জন্ম ১০৬ খৃষ্টপূর্বাব্দে ইতালির আর্পিনো শহরে। তিনি ছিলেন একাধারে প্রাচীন রোমের একজন প্রখ্যাত রাষ্ট্রচিন্তাবিদ, রাজনীতিবিদ, আইনজ্ঞ, শ্রেষ্ঠ গদ্য শিল্পী ও সুবক্তা। খ্রিস্টপূর্ব ৭৯ সালে তিনি এথেন্সে আসেন এবং হেরোডেটাস , থুকিডিটিস , প্লেটো ও অ্যারিস্টটলের ইতিহাস ও দর্শনের চর্চা শুরু করেন এবং মুগ্ধ হন। তাঁদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে লেখেন দুটি বিখ্যাত গ্রন্থ — দ্য রিপাবলিক (The Republic) এবং দা লস (The Laws)। সিসেরোর এই দুটো গ্রন্থ থেকে আমরা জানতে পারি তাঁর রাষ্ট্রচিন্তার বৈশিষ্ট্য ও ধারা সম্পর্কে। জানতে পারি,  ১) রাষ্ট্র একটি নৈতিক ও যৌথ সংস্থা এবং প্রত্যেক নাগরিকের সদস্য, ২) রাষ্ট্রের লক্ষ্য হলো নাগরিকদের সুশাসন এবং নিরাপত্তা প্রদান করা, ৩) নাগরিকদের ঐক্যবোধ দায়বদ্ধতা এবং অধিকারের ওপর রাষ্ট্রের স্থায়িত্ব নির্ভর করে, ৪) প্রাকৃতিক আইনের উপর নির্ভর করে রাষ্ট্রীয় আইন তৈরি ও পরিচালনা করলে রাষ্ট্রে অরাজগতা থাকে না।  প্রকৃতপক্ষে, সিসেরো রাষ্ট্রচিন্তার জগতে এক নব দিগন্তের উন্মোচন ঘটিয়েছিলেন। ঐ...

দিল্লির সুলতানি শাসন কী ধর্মাশ্রয়ী ছিল?

দিল্লির সুলতানি শাসন কী ধর্মাশ্রয়ী ছিল? দিল্লির সুলতানি শাসন কী ধর্মাশ্রয়ী ছিল? ভারতে সুলতানি শাসন কি ধর্মাশ্রয়ী ছিল? সুলতানি শাসনের প্রকৃতি সম্পর্কিত এই প্রশ্ন বিষয়ে ভারতীয় ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। ঐতিহাসিক ঈশ্বরী প্রসাদ, এ এল শ্রীবাস্তব, আর পি ত্রিপাঠি, রাম স্মরণ শর্মা প্রমুখ মনে করেন সুলতানি রাষ্ট্রের প্রকৃতি ছিল ধর্মাশ্রয়ী। অন্যদিকে সতীশচন্দ্র, মোহাম্মদ হাবিব, ডাক্তার কুরেশি, কে এম আশরাফ, ডঃ নিজামী প্রমূখ ঐতিহাসিক-এর মতে, সুলতানি রাষ্ট্র ছিল ধর্মনিরপেক্ষ, সামরিক ও অভিজাতান্ত্রিক। সুলতানি শাসন ধর্মাশ্রয়ী : পক্ষে যুক্তি  সুলতানি সাম্রাজ্যের প্রকৃতি ধর্মাশ্রয়ী ছিল -  এই মত প্রকাশকারী ঐতিহাসিকদের যুক্তি হল : শরীয়াতের প্রতি গুরুত্ব : সুলতানি শাসকরা ইসলামিক আইন অনুযায়ী শাসন ব্যবস্থা পরিচালনা করত। ডক্টর ঈশ্বরী প্রসাদের মতে, সুলতানি আমলের সামাজিক আইন গুলি ইসলামী ধর্মশাস্ত্র বা শরীয়তের বিধান অনুযায়ী লিপিবদ্ধ হয়েছিল। উলেমা শ্রেণীর গুরুত্ব : এই শাসনব্যবস্থায় উলেমা শ্রেণীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল এবং ইসলামী শাস্ত্র ও আইন কানুন অনুযায়ী শাসন পরিচালিত হত। বলা হয...

দিল্লি সুলতানি রাষ্ট্রের প্রকৃতি

দিল্লি সুলতানি রাষ্ট্রের প্রকৃতি কিরূপ ছিল? দিল্লি সুলতানি রাষ্ট্রের প্রকৃতি ভারতে সুলতানি রাষ্ট্রের প্রকৃতি সম্পর্কিত আলোচনাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, সুলতানি শাসনের প্রকৃতি সম্পর্কে ভারতীয় ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। ঐতিহাসিক ঈশ্বরী প্রসাদ, এ এল শ্রীবাস্তব, আর পি ত্রিপাঠি, রাম স্মরণ শর্মা প্রমুখ মনে করেন সুলতানি রাষ্ট্রের প্রকৃতি ছিল ধর্মাশ্রয়ী।  অন্যদিকে সতীশচন্দ্র, মোহাম্মদ হাবিব,ডাক্তার কুরেশি, কে এম আশরাফ, ডঃ নিজামী প্রমূখ ঐতিহাসিক এর মতে, সুলতানি রাষ্ট্র ছিল ধর্মনিরপেক্ষ, সামরিক ও অভিজাতান্ত্রিক। সুলতানি সাম্রাজ্যের প্রকৃতি ধর্মাশ্রয়ী ছিল -  এই মত প্রকাশকারী ঐতিহাসিকদের যুক্তি হল : সুলতানি শাসকরা ইসলামিক আইন অনুযায়ী শাসন ব্যবস্থা পরিচালনা করতে, এই শাসনব্যবস্থায় উলেমা শ্রেণীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল এবং ইসলামী শাস্ত্র ও আইন কানুন অনুযায়ী শাসন পরিচালিত হতো। দিল্লির শাসকেরা ইসলামী জগতের প্রধান ধর্ম গুরু ও শাসকের প্রতি অনুগত ছিল। রাষ্ট্রের কর ব্যবস্থা ইসলামী শরীয়ত নির্দেশিত নীতিমালা মেনে কার্যকর করা হতো। কিন্তু যারা এই মতের বিপক্ষে, তাদের যুক্তি হল : ইসলামী...

জিয়াউদ্দিন বারনি কে ছিলেন?

জিয়াউদ্দিন বারনি কে ছিলেন? জিয়াউদ্দিন বারনি কে ছিলেন? জিয়াউদ্দিন বারনি ছিলেন সুলতানি যুগের একজন সর্বশ্রেষ্ঠ ঐতিহাসিক ও রাষ্ট্রচিন্তাবিদ। তুর্কিস্তানের এক অভিজাত পরিবারে তাঁর জন্ম হয় ১২৮৫ খ্রিস্টাব্দে। এই পরিবার তিন প্রজন্ম ধরে সুলতানি শাসকদের অধীনে কর্মরত ছিলেন। জিয়াউদ্দিন বারানি নিজে মোহাম্মদ বিন তুঘলক ও ফিরোজ শাহ তুঘলকের সভাসদ ও নাদিম হিসেবে পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তবে তিনি সবচেয়ে খ্যাতি অর্জন করেছেন সুলতানি যুগের একজন প্রখ্যাত ঐতিহাসিক ও রাষ্ট্রচিন্তাবিদ হিসাবে। তার লেখা, ‘ তারিখ-ই ফিরোজশাহী’ এবং ‘ ফতোয়া ই জাহান্দারি’ গ্রন্থ দুটি তৎকালীন ভারতের ইতিহাস রচনায় গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই গন্ধ দুটি থেকে সুলতানি আমলের রাজনৈতিক ঘটনা ও শাসননীতির বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া যায়। তারিখ ই ফিরোজশাহী গ্রন্থে বরণী সুলতানদের নীতি ও চরিত্রের বিচার করেছেন। এবং ফাতওয়া ই জাহান্দারী গ্রন্থে রাষ্ট্রনীতি এবং সুলতানি রাষ্ট্রের প্রকৃতি সম্পর্কে তার অভিমত ব্যক্ত করেছেন। তার এই বিবরণ অনুযায়ী সুলতানি যুগের রাষ্ট্র ব্যবস্থার প্রকৃতি ছিল জাহান্দারী অর্থাৎ ধর্মনিরপেক্ষ। ---------xx--------

ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য

ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্যগুলো লেখো। ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্র কী? ধর্মাশ্রয়ী বা পুরোহিততান্ত্রিক রাষ্ট্রের ইংরেজি প্রতিশব্দ হল ‘ থিওক্র্যাটিক স্টেট ’। ‘ থিওক্র্যাটিক ’ শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ ‘ থিওস’  থেকে, যার অর্থ দেবতা। এদিক থেকে বিচার করলে,  দেবতা বা ঈশ্বর  কর্তৃক পরিচালিত রাষ্ট্রই হল ধর্মশ্রয়ী রাষ্ট্র। তবে, এই ধরনের রাষ্ট্রে স্বয়ং ঈশ্বর নয়,  ঈশ্বরের প্রতিনিধি হিসেবে একজন ধর্মগুরু বা পুরোহিত ঈশ্বরের নামে দেশের শাসন পরিচালনা করেন। ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য : শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থের দিক থেকে বিচার করলে ধর্মশ্রয়ী রাষ্ট্রের কয়েকটি চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্রে অদৃশ্য ঈশ্বরই হলেন সর্বশক্তির উৎস অর্থাৎ সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী। ঈশ্বরের নির্দেশ অর্থাৎ ধর্মগ্রন্থের বিধি-বিধানই রাষ্ট্রের আইন। ঈশ্বর স্বয়ং নয়, ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্রে ঈশ্বরের প্রতিনিধি হিসেবে ধর্মগুরু বা যাজক কিংবা পুরোহিত রাষ্ট্রের শাসন ক্ষমতা পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন।  এবং ঈশ্বরের আইন কার্যকরী করেন। সর্বোপরি ধর্মশ্রয়ী রাষ্ট্র...